রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিং এ থার্টি ফার্স্টের রাতে হামলা চালানো কিশোর গ্যাং ‘লও ঠেলা’ গ্রুপের মূল হোতা বাবু ওরফে দশের বাবু ও তার ৮ সহযোগীকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-২। বুধবার র্যাব-২ এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান র্যাব-২ এর অধিনায়ক লে কর্নেল আবু নাঈম মো. তালাত।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-২ এর অধিনায়ক লে কর্নেল আবু নাঈম মো. তালাত জানান, গত বছরের ৩১ তারিখ গভীর রাতে মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিং এলাকায় একদল সন্ত্রাসী দোকানপাট, বাড়িঘর ভাঙচুর এবং ছিনতাই করে। এর প্রেক্ষিতে র্যাব বিভিন্ন আলামত, ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা ও ছায়া তদন্ত বৃদ্ধি করে। গত রোববার আবারও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারামারি, ভাঙচুর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই বুধবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বাবু ওরফে দশের বাবু (২৬), মো. ফোরকান (২২), মো. পলাশ (২৩), মো. সুমন (২২), মো. সাগর (২৩), মো. রাজন (২৩), মো. নাজিম (২৪), মো. শাকিল (২০) ও মো. মিলন (২১)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ২টি চাপাতি, ৫ টি ছুরি, একটি স্টিলের পাইপ, একটি হোল্ডিং চাকু এবং একটি চেইন জব্দ করা হয়েছে।
২০১৭ সালে নিজেদের মধ্যে অন্তর্কোন্দলে ‘ভাইব্বা ল কিং’ গ্রুপ থেকে আলাদা হয়ে ‘লও ঠেলা’ গ্রুপ তৈরি করে বাবু। মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, বসিলা, চাঁদ উদ্যান এলাকায় ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ত ‘লও ঠেলা’ গ্রুপ। এ ছাড়া জবর দখল, ভাড়ায় শক্তি প্রদর্শন এবং আধিপত্য বিস্তারসহ নানা অপকর্মে বাবু তাদের ব্যবহার করত।
লও ঠেলা গ্রুপের প্রধান বাবু ওরফে দশের বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাবের এই কর্মকর্তা জানিয়েছে, বাবু ২০০০ সালে মায়ের সঙ্গে নড়াইল থেকে ঢাকায় এসে গাড়ির হেলপার, হোটেল বয় হিসেবে চাকরি করেন। কাজের ফাঁকে সে মাদকের প্রতি আসক্ত হয়ে পরে। মাদকের টাকার জন্য তার মায়ের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। পরবর্তীতে মাদকের টাকার জন্য ছোট চুরি, ছিনতাই এর মাধ্যমে তার অপরাধ জগতে হাতেখড়ি হয়।
২০১৪ সালে ‘ভাইব্বা ল কিং’ কিশোর গ্যাং এর সঙ্গে সে জড়িয়ে পড়ে এবং তার অপরাধের মাত্রা বেড়ে যায়। এই গ্যাং এর সঙ্গে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং মাদক কেনাবেচায় জড়িয়ে পড়ে বাবু। এক সময় তার কুখ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে অপরাধ জগতে সে ‘দশের বাবু’ নামে খেতাব পায়।
বাবুর বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, দস্যুতা, মাদক, ছিনতাইসহ মোট ৬টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। এ ছাড়াও গ্রেপ্তারদের মধ্যে মো. ফোরকানের নামে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন, মো. পলাশের নামে একটি হত্যা চেষ্টা ও শাকিলের নামে একটি মাদক মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।