এটিএম কার্ড ক্লোনকারী চক্রের আন্তর্জাতিক সদস্য তুরস্কের এক নাগরিককে ঢাকায় গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশের নাগরিক মো. মফিউল ইসলাম। আজ বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ডিএমপির সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নাগরিকদের এটিএম কার্ড ক্লোন করে টাকা তুলে নেন বুথ থেকে। এরপর আসেন বাংলাদেশে। এখানে এসেও চেষ্টা চালান ইস্টার্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারলেন না। শতাধিকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি। এর মধ্যেই টের পেয়ে যায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।ব্যাংকটির এন্টি স্ক্যামিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে এই চেষ্টার কথা জানতে পেরে পুলিশকে জানায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিভিন্ন মডেলের ফোন, একটি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোনিং এটিএম কার্ডসহ মোট ১৭টি কার্ড উদ্ধার করা হয়।তুরস্কের ওই নাগরিকের নাম হাকান জানবারকান (৫৫)। এটিএম কার্ড ক্লোনিংয়ের দায়ে তিনি ২০১৯ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কারারক্ষীদের হেফাজতে ভারতের আসামের জিবিপি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনি পালিয়ে যান। এরপর নেপালে যান। নেপাল থেকে আউটপাস নিয়ে তুরস্কে যান। ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশে এটিএম কার্ড ক্লোনিং করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশে এই তুরস্কের নাগরিক একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। ভারতে ২০১৯ সালে তার বাংলাদেশি সহযোগী শহিদুল ইসলামসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তিনি পালিয়ে এলেও শহিদুল এখনো ভারতের কারাগারে রয়েছেন। শহিদুলের ভাই মফিউল ইসলাম। তারা সবাই মিলে এই এটিএম কার্ড ক্লোনিং করে থাকেন।’
ঢাকায় এসে তিনি পল্টনের ক্যাপিটাল হোটেলে উঠেছিলেন। কার্ড ক্লোনিংয়ের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে রিমান্ডে এনে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। ঢাকার অতীতের কোনো ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবে পুলিশ।এই চক্রের সঙ্গে তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত বলেও প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন হাকান জানবারকান।