অপরাধআইন-আদালতএক্সক্লুসিভএশিয়াবিশ্ব সংবাদ

শুক্রাণুদাতার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা

শুক্রাণুদাতার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে ৩০ লাখ ডলারের মামলা করেছেন জাপানি এক যুবতী। কিছুদিন আগে ওই যুবতী একটি সন্তান জন্ম দিয়েছেন। টোকিওর ৩০ বছর বয়সী ওই যুবতী একজন দাতার সঙ্গে কমপক্ষে ১০ বার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে তার কাছ থেকে শুক্রাণু নিয়ে অন্তঃসত্ত্বা হন। তারপর সেই সন্তান প্রসব করেছেন।

তবে শুক্রানুদাতা তার কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন বলে তিনি ওই সন্তানকে ত্যাগ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, শুক্রাণু দাতা ওই ব্যক্তি নিজের সামাজিক, শিক্ষাগত এবং জাতিগত তথ্য সম্পর্কে তাকে মিথ্যে তথ্য দিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইয়াহু নিউজ।

জাপানের ‘তথ্য জানার অধিকার’ বিষয়ক আইনে শুক্রাণু দাতার আইনগত বাধ্যবাধকতা আছে তার পরিচয়ের পুরোটা এমন সব দম্পতির কাছে প্রকাশ করার। কিন্তু বহু দাতা নিজের পরিচয় এভাবে আড়াল করার কারণে শুক্রাণু দান নিয়ে বড় রকমের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, জাপানে বিপুল সংখ্যক দম্পতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে এভাবে শুক্রাণু দাতা খুঁজে নিচ্ছেন। তৃতীয় পক্ষের জড়িত থাকার মধ্য দিয়ে কমপক্ষে ১০ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছে বলে বলা হচ্ছে।

ওই যুবতী অভিযোগে বলেছেন, তিনি ও তার স্বামী দ্বিতীয় সন্তান চাইছিলেন।কিন্তু তিনি দেখতে পান, তার স্বামী সন্তান জন্মদানের সক্ষমতা হারিয়েছেন। ফলে দ্বিতীয় সন্তান ধারণ করতে তারা শুক্রাণুদাতা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২০ উত্তীর্ণ একজন দাতাও পেয়ে যান তারা।

ওই যুবক নিজেকে জাপানের একজন সিঙ্গেল বলে জানান। আরো জানান তিনি কিয়োটো ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। জাপানের শীর্ষ ইউনিভার্সিটিগুলোর মধ্যে অন্যতম এই বিশ্ববিদ্যালয়। তার সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে ওই যুবতী তার সঙ্গে কমপক্ষে ১০ বার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এতে ২০১৯ সালের জুনে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।

শুক্রাণুদাতার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছেন ওই যুবতী। তাতে তিনি বলেছেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে ওই ব্যক্তি তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছে। ফলে তার আবেগ নিয়ে খেলা করার জন্য তিনি প্রায় ২৮ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করেছেন।

শুক্রাণুদাতা প্রকৃতপক্ষে চীনের একজন নাগরিক। তিনি বিবাহিত। কখনো কিয়োটো ইউনিভার্সিটিতে যাননি। এ অবস্থায় ওই যুবতী সন্তান প্রসবের পর তিনি ও তার স্বামী সেই সন্তানকে ত্যাগ করেন। বর্তমানে ওই শিশুটি টোকিওর একটি শিশু পরিচর্যাকেন্দ্রে বড় হচ্ছে।

গত শ্রীষ্মে জাপানে প্রথমবারের মতো শুক্রাণু ব্যাংক খুলেছে দ্য মিরাই লাইফ রিসার্স ইনস্টিটিউট। সেখান থেকে জাপানি দম্পতিদের নিরাপদে শুক্রাণু বেছে নিয়ে সন্তান জন্মদানে সহায়তা দেয়া হয়। এই ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. হিরোশি ওকাদা সতর্ক করেছেন। বলেছেন, তদারকি ছাড়া দান করা শুক্রাণু স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকির হতে পারে। এতে নানা রকম বিপদ দেখা দেবে। তার মতে, শুক্রাণু দানের কমপক্ষে ১৪০টি প্লাটফর্মের শতকরা ৯৬.৪ ভাগ শুক্রাণু নিরাপদ নয়।

Back to top button