বর্তমানে দেশের সর্বত্র শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও চলছে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। ঠাণ্ডাজনিত রোগ-ব্যাধি বাড়ছে। করোনাভাইরাসের মতো বিপজ্জনক একটি রোগতো রয়েছেই এর সাথে বেড়েছে সর্দি-কাশি, হাঁপানিসহ ফুসফুসজনিত নানা ধরনের রোগ। শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি এ সময় বিশেষ নজর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ঠাণ্ডা পানিতে গোসল না করা, ঘরের বাইরে গেলে শরীরকে উত্তমরূপে ঢেকে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন। সর্বোপরি বাইরে বের হলে মাস্ক পরে বের হতে চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রায় ১০ দিনের বিরতির পর গুটি গুটি পায়ে আবার শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। সোমবারের মধ্যে রংপুর বিভাগের বেশির ভাগ এলাকা এবং রাজশাহী ও খুলনার প্রায় অর্ধেক এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর সারা দেশের রাতের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এমনটা বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বছরের এই সময়ে দেশে সবচেয়ে বেশি শীত থাকে, কিন্তু এ বছর বঙ্গোপসাগরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মেঘ আসার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় শীতের বাতাস আসতে বাধা পাচ্ছিল। এখন আকাশ মেঘমুক্ত হওয়ায় শীতের বাতাস স্বাভাবিকভাবে আসতে পারছে। তাই শীত বেড়েছে, ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত এই শীত ও শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাটের তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অন্য এলাকাগুলোর তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ছিল, অর্থাৎ শুধু ওই দুই জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে।উপদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন অঞ্চলে বিরাজ করছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশে ঠাণ্ডা বেড়েছে। সাইবেরিয়া অঞ্চলের ঠাণ্ডা বাতাস আসতে আসতে হিমালয় অঞ্চলে বাধাপ্রাপ্ত হয়। এর সামান্য একটি অংশ হিমালয়ে উপর দিয়ে এবং অপর অংশটি হিমালয়ের পশ্চিম ও পূর্ব অংশ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
এদিকে রোববারসহ দুই দিন ধরে সারা দেশে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। শীতের হিমেল বাতাস বইছে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১২ কিলোমিটার গতিতে। সেই সঙ্গে কুয়াশাও বাড়তে শুরু করেছে, বিশেষ করে নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতে রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশা ছিল। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, ওই ঘন কুয়াশা আগামী দিনগুলোতে আরও বাড়তে পারে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে, শীতের এই সময়ে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা এক থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এ সময়ে সাধারণত দেশের প্রায় অর্ধেক এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ থাকে। কিন্তু ৫ জানুয়ারির পর থেকে শৈত্যপ্রবাহ বিদায় নিয়েছিল। রোববার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।