উত্তর কোরিয়ায় হাইপারসনিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা
উত্তর কোরিয়ার কেন্দ্রীয় বার্তা সংস্থা জানায় যে, উত্তর কোরিয়া একটি হাইপারসনিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে।জানা গেছে, উত্তর কোরিয়ান একাডেমি অফ ডিফেন্স সায়েন্সেসের উদ্যোগে সদ্য উদ্ভাবিত এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ৭০০ কিলোমিটার উড়েছিল এবং সফলভাবে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। তা ছাড়া, ঠান্ডা আবহাওয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র জ্বালানি ব্যবস্থার নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করা হয়েছে।
এ নিয়ে মোট তিনটি হাইপারসনিক মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে, কিম জং উনের অধীনে সামরিক প্রযুক্তিতে অনেক দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। উৎক্ষেপণের সময় সরাসরি উপস্থিত ছিলেন কিম অর্থাৎ, নিজেদের প্রযুক্তির উপরে ভরসা করছেন তিনি। এ বছর উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কিম। বছর শুরু হতে না হতেই তার প্রমাণ দিতে শুরু করেছেন তিনি।
হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ক্রমাগত সফল উৎক্ষেপণ ‘জাতীয় কৌশলগত সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণ জোরদার করার ক্ষেত্রে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে বার্তাসংস্থা উল্লেখ করেছে।গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর উত্তর কোরিয়া সফলভাবে ‘হওয়াসোং-৮’ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর পর দ্বিতীয়বার হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করলো।দক্ষিণ কোরিয়া বুধবার জানায় যে, উত্তর কোরিয়া এদিন কোরীয় উপদ্বীপের পূর্ব জলরাশিতে অজ্ঞাত বিকিরণ নিক্ষেপ করেছে।
মঙ্গলবারের মিসাইল পরীক্ষার সময় কিম জং উন উত্তর কোরিয়ার সামরিক শক্তিকে মান ও পরিমাণ উভয় দিকেই বৃদ্ধির নির্দেশনা দেন। ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর এই প্রথম কোনো মিসাইল পরীক্ষার সময় সরাসরি উপস্থিত ছিলেন এই নেতা। কোরিয়া রিস্ক গ্রুপ উত্তর কোরিয়ার কার্যক্রম পর্যবেক্ষন করে এমন একটি সংস্থা। এর প্রধান নির্বাহী চাদ ওক্যারল বলেন, কিম জং উনের এই উপস্থিতি উত্তর কোরিয়ার গণমাধ্যমের প্রথম পাতায় বড় করে ছাপানো হয়েছে। এর মানে হচ্ছে, হাইপারসনিক প্রযুক্তিতে নিজের উৎসাহ ও প্রভাবের বিষয়টি লুকাতে চাননা কিম। যুক্তরাষ্ট্র একে কীভাবে দেখছে তা মোটেও গায়ে মাখছেন না তিনি।
হাইপারসনিক মিসাইল আধুনিক সমরাস্ত্রের জগতের সবথেকে বিধ্বংসী অস্ত্রগুলোর একটি। এই মিসাইল ঠেকানোর মতো প্রযুক্তি এখন বিশ্বের কোনো দেশের কাছেই নেই। ব্যালিস্টিক মিসাইলের পাল্লা যত বড়ই হোক না কেনো তার গতিপথ নির্ধারন করে একে থামানো অসম্ভব নয়। কিন্তু হাইপারসনিক মিসাইল খুবই অল্প সময়ে আঘাত হানতে সক্ষম। এটি শব্দের ৫ গুনেরও বেশি গতিতে আঘাত হানতে পারে। ঘন্টায় পাড়ি দেয় ৬ হাজার ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ। এ কারণে এই মিসাইল শনাক্ত করাও যেমন অসম্ভব, তেমনি একে থামানোরও কোনো সুযোগ নেই। বিশ্বে শুধু যুক্তরাষ্ট্র, উত্তর কোরিয়া ও চীনই এই প্রযুক্তিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করতে পেরেছে।
এ নিয়ে মোট তিনটি হাইপারসনিক মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে, কিম জং উনের অধীনে সামরিক প্রযুক্তিতে অনেক দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। উৎক্ষেপণের সময় সরাসরি উপস্থিত ছিলেন কিম অর্থাৎ, নিজেদের প্রযুক্তির উপরে ভরসা করছেন তিনি। এ বছর উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কিম। বছর শুরু হতে না হতেই তার প্রমাণ দিতে শুরু করেছেন তিনি।
এদিকে উত্তর কোরিয়ার এই একের পর এক মিসাইল পরীক্ষা নিয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের মিশন, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, জাপান, বৃটেন ও আলবেনিয়া নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেছেন, এসব কর্মকা-ের ফলে ভুল বোঝাবুঝির ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাতে আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা হুমকিতে রয়েছে। বিবৃতিতে এই গ্রুপটি উত্তর কোরিয়াকে এমন কর্মকা- চালানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়, যা আরো অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।