সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান ও তাঁর স্ত্রী চিকিৎসক জাহানারা এহসান রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় এসে নিজেদের লাইসেন্স করা তিনটি অস্ত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল ও দুটি শটগান জমা দেন তাঁরা।
পুলিশ বলছে, গত বৃহস্পতিবার মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী শারীরিক-মানসিক নির্যাতন, মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগ করে ধানমন্ডি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এর আগে স্বামীর নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছিল তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতেই অস্ত্রগুলো জমা দিয়েছেন তাঁরা।
ধানমন্ডি থানার ওসি বলেন, যেহেতু ডা. মুরাদের স্ত্রী তার বিরুদ্ধে নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে একটি জিডি করেছেন, তাই তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ডা. মুরাদের নামে লাইসেন্স করা অস্ত্রগুলো থানায় জমা দিতে বলি। থানার নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি গতকাল (শনিবার) সন্ধ্যায় এসে দুটি অস্ত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়া ডা. মুরাদের স্ত্রীকেও তার লাইসেন্স করা অস্ত্র জমা দেওয়ার কথা বললে তিনিও শনিবার অস্ত্র জমা দিয়ে গেছেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনে তিনটি অস্ত্র জমা দিয়েছেন, যার মধ্যে একটি পিস্তল ও দুটি শটগান।
এদিকে নারীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর বক্তব্যের দায়ে ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে করা জিডি তদন্তে আদালতের অনুমতি চাইবে পুলিশ। থানা পুলিশ জানিয়েছে, এই ধরনের জিডি তদন্তের একটা প্রক্রিয়া আছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে তা তদন্ত করতে হয়। আদালতের অনুমতির প্রক্রিয়া চলছে।
গত বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) ডা. মুরাদ স্ত্রী-সন্তানদের গালিগালাজ করে মারধর করতে গেলে তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে সহায়তা চান। অভিযোগ পেয়ে ধানমন্ডি থানা পুলিশ তাদের বাসায় গেলে মুরাদ হাসান বাসা থেকে বের হয়ে যান। পরে তার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমান সম্পর্কে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে গত নভেম্বরের শেষের দিকে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন মুরাদ হাসান। তখন তিনি তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। ওই বিতর্ক-সমালোচনার মধ্যেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর ফোনালাপের আরেকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন,একই সঙ্গে তাঁকে হুমকিও দেন।
এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এরপর গত ৭ ডিসেম্বর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। দলীয় পদও কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর। পরে ৯ ডিসেম্বর রাতে কানাডার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন মুরাদ। কিন্তু কানাডায় ঢুকতে না পেরে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন তিনি। এরপর আর প্রকাশ্যে আসেনি জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনের সাংসদ মুরাদ হাসান।