ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় চলছে। বোমা ফাটিয়েছেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। তাঁকেই নাকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বোধবুদ্ধি লোপ পেয়েছে। একদিন তিনি ঠিকই বুঝতে পারবেন।
গতকাল সোমবার হরিয়ানায় কৃষক সমাজ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই বোমা ফাটান রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। সেখানে বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘দাম্ভিক’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সম্প্রতি অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনে কথা উল্লেখ করেন রাজ্যপাল।
ভারতের সোশ্যাল মিডিয়ায় সত্যপালের সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গণমাধ্যমেও এ নিয়ে খবর এসেছে। তবে বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে বিজেপি। অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও কোনো মন্তব্য করছে না। এর পরপরই ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে হুলুস্থুল পড়ে যায়। অবশ্য সন্ধ্যার দিকেই নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসেন সত্যপাল।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, বেশ কিছু দিন ধরেই সত্যপালের কথাবার্তায় অসন্তোষ টের পাওয়া যাচ্ছিল। এর মধ্যে তিনি প্রধানমন্ত্রীর ‘বোধবুদ্ধি’ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের দাবি করলেন। তবে সত্যপালের ওই বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হতেই অমিত শাহের সঙ্গে কথোপকথনে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে এমন কথাবার্তা হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সত্যপাল। তিনি বলেন, ‘আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।’ যদিও বিরোধীরা বলছেন, চাপে পড়েই নিজের বক্তব্য অস্বীকার করছেন রাজ্যপাল।
কৃষক সমাজের সেই অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের দেওয়া বক্তব্য ভারতের গণমাধ্যমগুলো হুবহু উদ্ধৃত করেছে। সত্যপাল বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁকে বলেছেন, ‘সত্য, ইসকি আকল মার রাখকি হ্যায় লোগোনে। তুম বেফিকর রহো। মিলতে রহো। ইয়ে কিসি না কিসি দিন সমঝ মে আ জায়েগা!’ এর বাংলা অনুবাদ করলে মোটামুটি যা দাঁড়ায় তা এ রকম- সত্য (সত্যপাল), তাঁর বোধবুদ্ধি লোপ পেয়েছে। তুমি নিশ্চিন্ত থাকো। দেখা সাক্ষাৎ করে চলে যাও। কোনো না কোনো দিন উনি ঠিকই বুঝতে পারবেন।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, গতকাল সোমবার হরিয়ানায় কৃষক সমাজের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সত্যপাল বলছেন, তিনি কৃষকদের হয়ে কথা বলতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। কিন্তু সেই আলোচনা তর্কবিতর্কে গড়ায়। কৃষকদের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে পাঁচ মিনিটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া বাঁধে তাঁর। কথোপকথনে প্রধানমন্ত্রীকে অত্যন্ত দাম্ভিক বলে মনে হয়েছে তাঁর।
প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বলেন, ‘ (কৃষক আন্দোলনে) পাঁচশ লোক মারা গেছেন। আপনি তো কুকুর মারা গেলেও চিঠি দেন।’ উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা কি আমার জন্য মারা গেছে?’ সত্যপাল বলেন, ‘হ্যাঁ। আপনার জন্যই মারা গেছে। কেন না আপনি রাজা।’ ভিডিওতে আরও দেখা যায়, সত্যপাল দাবি করছেন, দু’পক্ষের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পরে তাঁকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। অমিত শাহ তাঁকে তখন প্রধানমন্ত্রীর ‘বোধবুদ্ধি’ নিয়ে সেসব বলেন।