বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ৩ বছর ধরে ধর্ষণ

প্রায় ১৫ বছর আগে বনিবনা না হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় ৩২ বছরের এক নারীর। তিনি দুই সন্তানের জননী। ঢাকার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ফিজিওথেরাপির কাজ করতেন। সেখানে কাজ করার সুবাদে পরিচয় হয় উপজেলার করমজাপাড়া এলাকার মৃত গোলাম মস্তফার ছেলে মো. মিলনের (৩০) সঙ্গে।

পরে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় একটি বাসা ভাড়া করে তার সঙ্গে ২০১৯ সালে থেকে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় প্রায় ৩ বছর যাবৎ সংসার ও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে মিলন। ওই নারীর টাকায় মিলন ঢাকায় লেখাপড়া করেন বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তালতলী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।বরগুনার তালতলীতে বিয়ের প্রলোভনে এক নারীকে ৩ বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া তার দেড় লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে অভিযুক্ত ঐ যুবক। 

ভুক্তভোগী নারীর থেকে মিলন তার নিজ বাড়িতে নতুন ঘর তৈরি করে বিয়ের কথা বলে এককালীন দেড় লাখ টাকা নেয়। ঘর তৈরি করে মিলন ফের ঢাকা গিয়ে ওই নারীর কাছে থাকেন। মিনারা (ছদ্মনাম) মিলনকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে মা ও বোন পরিচয়ে দুই নারীকে গ্রাম থেকে ঢাকা নিয়ে আসেন। পরে ঢাকার রামপুরা বাজারে মিলনের সাথে দেখা করতে গেলে ওই দুই নারীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরে তারাও বিয়ের কথা বলে আমাকে সান্ত্বনা দেন।

এ ব্যাপারে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে গত বছরের মে মাসের ৯ তারিখ একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার আইনজীবী নিয়োগ করা হয় হাসিবুর রহমানকে। তার সহযোগী মো. খোকনের বন্ধু মিলন।এজন্য আইনজীবী আমার সাথে মামলা নিয়ে প্রতারণা করেন। মামলায় বিচার পাওয়ার ধারা সঠিকভাবে উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়াও আমাকে যে মিলন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বছরের পর বছর স্ত্রী হিসেবে ব্যবহার করেছে, সেটাও মামলায় তেমন উল্লেখ করেননি। এজন্য আদালত মামলাটি খারিজ করে দেয়।

ঢাকার রামপুরায় কথা হওার পর মিলন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে চলে যায়। এরপর আর কোনো যোগাযোগ করেননি। পরে মোবাইল ফোনে বিয়ের কথা বললেই শুরু হয় মিলনের নানা তালবাহানা। এ ঘটনায় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সামনে মিলনকে মুখোমুখি করা হলে তিনি বলেন আমাকে তিনি বিয়ে করতে পারবে না। আমার কাছ থেকে বিগত দিনে যে টাকা-পয়সা নিয়েছে, তা অস্বীকার করেন এবং তারই বন্ধু মিজানুর রহমান সবুজ আমাকে ডেকে নিয়ে কিছু টাকা নিয়ে মীমাংসা হয়ে যেতে বলেন। আমি তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও জীবন নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মিলনের ফোনে কল দিলে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীর নারীর বিষয়ে জানতে চাইলে ফোনটি কেটে দেন। এরপরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান বলেন, ভুক্তোভোগীর নারীর ঘটনা সম্পূর্ণ সত্যি ছিল। তবে আদালত মনে করছে মামলাটি মিথ্যা। এজন্য হয়তোবা মামলা খারিজ করেছে। এর বেশি আদালতের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ওই নারী থানায় আসছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন আদালতে মামলা হয়েছে। পরে মামলার কাগজপত্র নিয়ে তিনি আর আসেননি।

Exit mobile version