টাকা চাওয়ার অডিও ফাঁস নিয়ে আ.লীগ নেতা খোকনের বক্তব্য
গত কয়েকদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহার সঙ্গে সোনারগাঁও থানা যুবলীগের সভাপতি ও ঠিকাদার রফিকুল ইসলাম নান্নুর আলাপের অডিও রেকর্ড নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা চলছে। অডিও রেকর্ডিংয়ে নান্নুর কাছে খোকন সাহাকে ৫ লাখ টাকা চাইতে শোনা যায়।
ঠিকাদারের কাছে টাকা চাওয়ার অডিও ফাঁস নিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা বলেছেন, কোনো পক্ষের প্ররোচণায় নান্নু আমাদের মধ্যে হওয়া আলাপের অডিও ফাঁস করেছে। বিষয়টি আমার দলের অনেক নেতা ভিন্ন রঙ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।
ফাঁস হওয়া অডিওতে শোনা যায়, খোকন সাহা যুবলীগ নেতা নান্নুর কাছে ৫ লাখ টাকা চান। আইভীকে মেয়ে সম্বোধন করে তাকে জেতাতে নিজে কাজ করছেন বলে নান্নুকে জানান।এ বিষয়ে খোকন সাহা বলেন, আপনি যদি অডিওটি শুনে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই শুনেছেন যে, আমি বলেছি, আমিতো আইভীর পক্ষে। তাকে পাস করাতে হবে। এ জন্য আমার টাকা প্রয়োজন। আমি কিন্তু কোথাও বলিনি আইভীর জন্য টাকা প্রয়োজন।
এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। যুবলীগ নেতা নান্নু সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আর খোকন সাহা সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলয়ের হিসেবে চিহ্নিত।
অ্যাডভোকেট খোকন বলেন, এ বিষয়কে কোনো পক্ষের প্ররোচণায় নান্নু আমাদের মধ্যে হওয়া আলাপের অডিও ফাঁস করেছে। বিষয়টি আমার দলের অনেক নেতাই ভিন্ন রঙ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।তিনি আরও বলেন, নান্নু শুধু আমার দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাই নন, আমার ক্লাইন্টও। তাকে আমি ছোট ভাইয়ের মতো দেখি। তার মামলা মোকদ্দমা আমি করে থাকি। তাই তার সঙ্গে আমার অর্থনৈতিক সর্ম্পক পূর্ব থেকেই রয়েছে।
যেহেতু আইভী দলের মনোনীত প্রার্থী তাই আমারও দায়িত্ব রয়েছে আইভীর হয়ে কাজ করার। আমরা যারা সিনিয়র নেতা তারা আইভীর জন্য নিজের পকেটের টাকা খরচ করেই কাজ করবো। এটিই রীতি। এ দায়িত্ব বোধ থেকেই আমি নান্নুর কাছে টাকা চেয়েছি আমার জন্য। দলের প্রয়োজনে সচ্ছল নেতাকর্মীরাই টাকা দিয়ে থাকে।
যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার রফিকুল ইসলাম নান্নু বলেন, দাদা আমার কাছে আইভী আপার নির্বাচনের জন্য টাকা চেয়েছেন। আমি দিতে পারিনি। তিনি বলেছিলেন, আমি টাকা দিলে আমার সব কাজ করে দেবেন। আমি টাকা না দিয়ে দলের নেতাদের কাছে বিষয়টি জানাই।
অডিওটি ফাঁস হয় গত শনিবার। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, আমি এটি নিয়ে মোট ৪টি নির্বাচন করছি। এমনটি আগে ঘটেনি। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হয়েছে।অডিও কীভাবে ফাঁস হলো জানতে চাইলে নান্নু আরও বলেন, আমি নেতাদের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু অডিও কারও কাছে দিইনি। কীভাবে সেটি ফাঁস হয়েছে এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারবো না।
গত রোববার রাতে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানকের উপস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে একটি বেঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মির্জা আজম এমপি, বাহাউদ্দিন নাসিম, মৃনাল কান্তি দাস এমপি, বিএম মোজাম্মেল, কেন্দ্রীয় নেতা সানজিদা খাতুনসহ জেলা ও মহাগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে উপস্থিত থাকা একাধিক নেতা জানান, ফাঁস হওয়া অডিওর বিষয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে আইভী এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাইলে নানক তাকে থামিয়ে দিয়ে এ প্রসঙ্গে কোনো কথা না বলার জন্য বলেন।বৈঠকে অ্যাডভোকেট খোকন সাহাকেও রাখা হয়।