বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য পদ থেকে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। সোমবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে তাকে (তৈমূর) জানানো হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের পদ হারালেও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে রাজি নন তৈমূর আলম খন্দকার। ২০১১ সালের প্রথম সিটি নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তে শেষ মুহূর্তে সরে গেলেও এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি ভোটে লড়ে যাবেন।
কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দলের পক্ষ থেকে তৈমূর আলম খন্দকারকে দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য পদ থেকে আপনাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। তবে দলীয় পদ থেকে তৈমূরকে কেন সরিয়ে দেয়া হলো, এ নিয়ে কোনো তথ্য জানায়নি বিএনপি।
এক দশক আগের সেই নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হয়নি। তবে পাঁচ বছর আগের ভোট হয়েছে দলীয় প্রতীকেই। সেই বছর ধানের শীষ চেয়েও পাননি তৈমূর। এবার বিএনপির সিদ্ধান্ত, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো ভোটে না যাওয়ার। তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মতো রাজধানী লাগোয়া এই জনপদটিতেও ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর’ পেছনে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) নির্বাচন তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৬ই জানুয়ারি। এই নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন তৈমূর আলম খন্দকার। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য পদে ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক তিনি।তবে ইতোপূর্বেই নির্বাচনের সময় দলীয় দায়িত্ব পালনের জন্য এ পদে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেয়া হয় যুগ্ম আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবিকে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, তৈমূরের ভোটে লড়ার ইচ্ছার সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। আর তিনি এখন আর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নন।দলের এই সিদ্ধান্ত জানার পর তৈমূর কী ভাবছেন? তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। এখন আর আমার কোনো বাধা নেই।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে এবং স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ না নেয়ার ঘোষণা আগেই জানিয়েছে বিএনপি। এ কারণে এবারের স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দেয়নি দলটি। তবে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীকে স্বতন্ত্রভাবে লড়তে দেখা গেছে। তৈমূরও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হাতি প্রতীক নিয়ে নাসিক নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
দল সিদ্ধান্ত জানানোর পর নারায়ণগঞ্জে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি নেতা। সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে ভোটের আগে আগে তার সরে যেতে বাধ্য হওয়ার স্মৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দল এখানে উপকৃত হইছে কি না জানি না, জাতি কোনো উপকৃত হইছে কি না জানি না, কিন্তু সরকার দলের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।’
‘অনেকে এবারও ভাবতে পারেন, সরকারদলীয় প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে আমাকে দলের পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি, আমার দল আমাকে একটা উপকার করছে। আমি রাস্তার মানুষ ছিলাম, রাস্তায় রাস্তায় ছিলাম, বস্তিতে ছিলাম এখন সেখানে ঘুরব।‘এবার জনগণের জন্য যদি আমার রাস্তায় মৃত্যু হয়, হবে৷ রাজপথে আমার জন্ম, রাজপথে আমার মৃত্যু হবে। আমার ভাগ্যের মালিক আল্লাহ।’