কক্সবাজারে ধর্ষণ মামলা করতে বাদীর টাকা খরচ করতে হয়েছে
কক্সবাজারে ধর্ষণ মামলার বাদী জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করে সাহায্য পাননি। এরপর মামলা করতে গিয়ে তাঁকে টাকা খরচ করতে হয়েছে এবং পরে চা–পানি খাওয়ার টাকাও দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। বাদী আজ বুধবার বলেন, গত ২২ ডিসেম্বর রাত ২টা থেকে পর দিন রাত ৪টা পর্যন্ত তারা কক্সবাজার থানায় ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন অভিযুগটা দিই, আমার থন ৫শ টাকা চাইছে। পরে একশ টাকা ফেরত দিছে। এর আগেও নিছে।’ বাদী যখন কথা বলেন তখন তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পাশেই ছিল।
মামলা নিতে টাকা, চা–নাস্তার খরচ নেওয়া, উড়ো চিঠি দেওয়া ব্যক্তির সঙ্গে পুলিশের সখ্য কেন– এসব বিষয় নিয়ে কক্সবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীরুল গিয়াস বলেন, এমন কোনো তথ্য তাঁর জানা নেই। এই দম্পতির দেখভালের দায়িত্ব একজন নারী কনস্টেবলের ওপর ছিল। তাঁরা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন।
বাদী আরও জানান, গত ২২ ডিসেম্বর তাঁর স্ত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাঁরা থানায় যান। টানা প্রায় ৩০ ঘন্টা তাঁদের নাওয়া–খাওয়া হয়নি। ২৩ ডিসেম্বর বিকেল ৫টার দিকে তিনি একবার থানা চত্বরের কাছে একটি দোকান থেকে পানি কিনতে যান। এ সময় তাঁর হাতে অপরিচিত এক ব্যক্তি একটি চিঠি ধরিয়ে দেন।
ওই দিন সন্ধ্যায় মামলা করার সময় তিনি চা খেতে বাইরে যেতে চান। দোকান থেকে এক কাপ রং চা খেয়ে একশ টাকার নোট বাড়িয়ে দিলে দোকানি তাঁকে ত্রিশ টাকা ফেরত দেন। বাকি টাকা চাইলে দোকানি বলেন, তাঁর সঙ্গে থাকা কনস্টেবল মিজান ও তাঁর সঙ্গীর চা–সিগারেটের খরচ রাখা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা যে ব্যক্তি তাঁকে চিরকুট ধরিয়ে দিয়েছিলেন, তিনিই কনস্টেবল মিজানের সঙ্গে ছিলেন। আর এই কনস্টেবলই সার্বক্ষণিক তাঁদের পাহারা দিচ্ছিলেন।
স্ত্রী অপহরণের শিকার হওয়ার পর বাদী ৯৯৯ এ ফোন করলেও পুলিশের তরফ থেকে অস্বীকার করা হচ্ছিল। তবে আজ বুধবার জাতীয় জরুরি সেবা হেল্প ডেস্কের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মো. তবারকউল্লাহ বলেন, গত ৮ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী নারী ফোন করেছিলেন। আর ২২ ডিসেম্বর মামলার বাদী ফোন করেছিলেন। তিনি তিনটি ফোন ব্যবহার করেন।
এর একটি থেকে ২২ ডিসেম্বর রাত ৮টা ৩২ মিনিটে একটি ফোন আসে। সেখানে তিনি জানান, তাঁর স্ত্রীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ৯৯৯-এ ফোন ধরে তাঁকে থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি বলা হয়েছিল।এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, মামলার বাদী জানাননি যে তাঁর স্ত্রীকে কেউ অপহরণ করেছে। তাছাড়া গত ৮ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী নারী একবার ৯৯৯ এ ফোন করেন। তিনি ওই সময় তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন।