এমভি অভিযান ১০ লঞ্চে আসলে কতজন যাত্রী ছিল?
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান ১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ ও আহত হয়েছেন আরো শতাধিক।এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। নিখোঁজদের সন্ধানে ঝালকাঠিতে ভিড় করছেন তাদের স্বজনরা। না পেয়ে অনেকেই হাসপাতাল ও সুগন্ধা নদীর দুই পাড়ে খোঁজ নিচ্ছেন। ক্রমেই বাড়ছে স্বজনদের ভিড়। চলছে আহাজারি। ফলে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন লঞ্চের যাত্রী সংখ্যা নিয়ে।
সেলিম নামের এক যাত্রী বলেন, এই রুটে নিয়মিতভাবে প্রতিটি লঞ্চে হাজারের বেশি যাত্রী থাকে। বৃহস্পতিবারও লঞ্চটি কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। আগুন লাগার পর মানুষ ঠেলাঠেলি করছে। নামার মতো জায়গা ছিলো না। ফলে অধিকাংশ যাত্রী নামতে পারেনি। আমার মতো যারা পানিতে লাফিয়ে পড়ছেন তাদের অনেকেই উদ্ধার হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা এমভি লঞ্চে এক হাজার থেকে ১২শ’ যাত্রী ছিল।লঞ্চের স্টাফ সংখ্যা ছিল ৪৬ জন। নাম প্রকাশ করা না শর্তে লঞ্চের এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সরকারি ছুটির দিন হওয়ার কারণে লঞ্চে যাত্রী সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। শীতকাল হওয়ার কারণে সবাই ঘুমিয়ে ছিল। কেবিনগুলো ছিলো পরিপূর্ণ। যাত্রীদের চাপের কারণেই স্টাপ কেবিনগুলোও ভাড়া হয়েছিল।
বেঁচে ফেরা লঞ্চের আরেক যাত্রী মিজান মল্লিক বলেন, লঞ্চের ডেকেই ৭/৮ শ যাত্রী ছিল। আমি ২য় তলায় জায়গা না পেয়ে নিচ তলায় বিছানা করে ছিলাম। ইঞ্জিন রুম থেকে আগুন দাউ দাউ করে ছড়িয়ে পড়ে। মানুষের দিশেহারা হয়ে যায়। আমি পানিতে লাফিয়ে পড়ি। কয়েক মিনিট পানিতে ভেসে ছিলাম। ২ তলা থেকে কয়েক শতাধিক মানুষ পানিতে লাফিয়ে পড়েছে। আমি কাউকে বাঁচতে পারিনি। উপরে উঠে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
ফায়ার সার্ভিসের একটি সূত্র বলছে, লঞ্চের কেবিনগুলোতে তেমন একটা মরদেহ পাওয়া যায়নি। কেবিনে থাকা যাত্রীরা পুড়ে টাইলস এর সাথে মিশে গেছে।ফায়ার সার্ভিস ও উদ্ধার কাজে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রাথমিক ধারণা, ইঞ্জিন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখ বলছেন, ইঞ্জিনে কোনো ত্রুটি ছিল না। যাত্রী সংখ্যারও কোন তথ্য নেই তার কাছে।উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া ফায়ার সার্ভিস বলছে, লঞ্চটিতে কত সংখ্যক যাত্রী ছিল তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি।