দেশজুড়ে শীত বেড়ে গেছে। দেশের উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। এক দিনের ব্যবধানে দেশের বেশির ভাগ এলাকার তাপমাত্রা তিন থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমেছে। ফলে দেশের অন্তত ১০টি জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, কাল মঙ্গলবারও দেশের বেশির ভাগ এলাকার তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। শৈত্যপ্রবাহ আরও নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বার্তায় বলা হয়, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও বরিশাল অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি আরও বিস্তার লাভ করতে পারে।আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলসহ দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ। বিশেষ করে রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
আজ সোমবার ভোরে রাজধানীতে শীতের অনুভূতি হঠাৎ বেড়ে যায়। তবে বেলা গড়াতে রোদ বেড়ে শীতের অনুভূতি কমে আসে। সন্ধ্যা থেকে আবারও হিম হিম শীতের বাতাস বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর তাপমাত্রা আবারও কমে আসে। আজকে ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামেনি। কিন্তু ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে শৈত্যপ্রবাহের কাছাকাছি তাপমাত্রা, অর্থাৎ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে চলে আসে। ফলে দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চল হয়ে মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত শীতের অনুভূতি বেড়েছে।
সোমবার সবচেয়ে কম তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকা এলাকাগুলোর মধ্যে যশোরে ৭ দশমিক ৪, তেঁতুলিয়ায় ৮ দশমিক ৮, ঈশ্বরদীতে ৯, রাজশাহীতে ৯ দশমিক ৪, রাজারহাটে ৯.৫, বদলগাছিতে ৯.৮, বরিশালে ৯.৯ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া আরও আট জেলার তাপমাত্রা ১০-এর ঘরেই রয়েছে। জেলাগুলো হলো, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, তাড়াশ, ডিমলা, মোংলা, সাতক্ষীরা ও কুমারখালী।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, অনুকূল পরিস্থিতির কারণে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা শীতল বাতাসের প্রবাহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। যে কারণে উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত শীতের তীব্রতা একই রকমের থাকতে পারে। এরপর তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে।
উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ কাঘের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এলাকায় বিরাজমান। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন বিষুবীয় ভারত মহাসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে উত্তর সুমাত্রা উপকূলের অদূরে দক্ষিণ আন্দামান সাগরে অবস্থান করছে।পূর্বাভাসে বলা হয়, সারাদেশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। ভোরের দিকে দেশের কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আজ থেকে গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, নঁওগা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল ও যশোরে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে তাপমাত্রার পারদ সবচেয়ে বেশি নেমেছে চুয়াডাঙ্গায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা এ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ ছাড়া যশোরের তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমেছিল। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বেশির ভাগ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ ও এর কাছাকাছি তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে। রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে।