বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তাঁর অবনতিশীল শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে চিকিত্সার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ইভান স্টেফানেক। এ বিষয়ে একটা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লেখা এক চিঠিতে স্টেফানেক এ অনুরোধ জানান।
শুক্রবার গণমাধ্যমকে ওই সদস্যের চিঠির অনুলিপি পাঠান বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান। চিঠিতে তারিখ ৮ ডিসেম্বর উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার পরিবার আবেদন করেছে। খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ ছাপা হয়েছে। এ অবস্থায় দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইইউ পার্লামেন্টের ওই সদস্য।
ইভান স্টেফানেক চিঠিতে লেখেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে। তাঁর শর্তাধীন মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি ও জরুরি ভিত্তিতে চিকিত্সার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছে তাঁর পরিবার।তিনি আরও লেখেন, ‘খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতির বিষয়টির ওপর আলোকপাত করে আপনি ও আপনার সরকারের কাছে আবেদন করব, জরুরি চিকিত্সার জন্য তাঁকে বিদেশে পাঠাতে তাঁর পরিবারের আবেদনে যেন অনুমোদন দেওয়া হয়।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি চিঠিতে লেখেন, আমরা লক্ষ্য করি যে বাংলাদেশ সরকার নয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে বসবাসের অনুমতি দিয়ে প্রশংসনীয় পন্থা নিয়েছে। এটি প্রকৃতপক্ষে বিশ্ব শরণার্থী সংকটে একটি বিশাল অবদান। অনুরোধ করছি যে, আপনি এই বিপদজনক সময়ে বেগম খালেদা জিয়ার গুরুতর পরিস্থিতি বিবেচনা করে তার মানবিক এবং উন্নত স্বাস্থ্যের অধিকারকে সম্মান করুন এবং তাকে সর্বোচ্চ প্রাপ্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার জন্য বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দিন।
গত ১৩ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর চিকিৎসার জন্য গঠিত হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড অবিলম্বে তাঁকে বিদেশে উন্নত সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসার সুপারিশ করেছে।খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর অনুমতি চেয়ে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
তবে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী করণীয় বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে কিছু জানানো হয়নি বা ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তী করণীয় তিনিই নির্ধারণ করবেন।