অপরাধআইন-আদালতআওয়ামী লীগএক্সক্লুসিভবাংলাদেশব্রেকিং নিউজরাজধানীরাজনীতিশিক্ষাঙ্গন

আবরার হত্যা মামলায় ২০ জনের ফাঁসির দন্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন

বহুল আলোচিত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ আসামিকে ফাঁসি ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। আজ দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা।এর আগে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মামলার ২২ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।

দুই বছর আগে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন।

গত ২৮শে নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। তবে রায় প্রস্তুত না হওয়ায় সেদিন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান রায় ঘোষণার জন্য ৮ই ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন। আগের ধার্য দিনে রায় ঘোষণা না করার বিষয়ে বিচারক বলেন, রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের আইনজীবীরা যে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন, তা বিশ্লেষণ করে রায় প্রস্তুত করা এখনো সম্ভব হয়নি। রায় প্রস্তুত করতে আরও সময় লাগবে। তাই এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য ৮ই ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হলো।

মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। তা আমলে নিয়ে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। আসামিদের মধ্যে ২২ জন কারাগারে রয়েছেন। পলাতক তিনজন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া বাংলা ম্যাগাজিনকে বলেন, অভিযোগ প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। ১৪ নভেম্বর উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন (২৮ নভেম্বর) দিন ধার্য করেন আদালত। তাঁরা ২৫ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২১টি আলামত ও ৮টি জব্দ তালিকা জমা দেন। গ্রেপ্তার ২২ জনের মধ্যে ৮ জন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা সবাই বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। চলতি বছরের ৮ই সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান অভিযোগ সংশোধনে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন গ্রহণ করে ২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ পুনর্গঠন করেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ করে ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে আবরারকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।’আদালতে সাক্ষ্যদানকালে আবরারের বাবা বলেছিলেন, আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাঁর ছেলেকে ডেকে নিয়ে ক্রিকেট স্টাম্প, লাঠিসোঁটা ও রশি দিয়ে প্রচণ্ড মারধর করেন। এ কারণে তাঁর ছেলে মারা যান। পরে আসামিরা মরদেহ হলের দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে ফেলে রাখেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী হিসেবে ছিলেন মোশাররফ হোসেন কাজল, আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া, আবদুস সোবহান তরফদার, প্রশান্ত কুমার কর্মকার, মিজানুর রহমান, আলমগীর হোসেন, শহিদুল ইসলাম ও মশিউর রহমান। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মাহাবুব আহমেদ, আমিনুল গণী, গাজী জিল্লুর রহমান, আজিজুর রহমান, ফারুক আহমেদ প্রমুখ।

Back to top button