সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের যে অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে উদ্দেশ্যে করে অশালীন ও বর্ণবাদী মন্তব্য করেন ডা. মুরাদ হাসান। সেই অনুষ্ঠানের উপস্থাপক নাহিদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
অভিযোগ রয়েছে, নাহিদ ওই সাক্ষাৎকারে প্রতিমন্ত্রীকে অশালীন মন্তব্য করার জন্য উসকানিমূলক একাধিক প্রশ্ন করেছেন। আর এসব অভিযোগের ভিত্তিতে নাহিদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিচ্ছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।জানা যায়, নাহিদের বাড়ি চট্টগ্রামে। তিনি বহুদিন ধরে এভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে আসছেন।
গত ১ ডিসেম্বর নাহিদরেইন্স পিকচার্স নামে একটি ফেসবুক পেজে লাইভ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন ডা. মুরাদ। এরপর সেই লাইভ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।‘অসুস্থ খালেদা, বিকৃত বিএনপির নেতাকর্মী’ শিরোনামে অনুষ্ঠানটি যিনি উপস্থাপনা করছিলেন তার নাম নাহিদ। অনুষ্ঠানে মুরাদ হাসানের আপত্তিকর মন্তব্যগুলো ফেসবুকে ভাইরাল হলে সমালোচনার মুখে পড়েন নাহিদ। তখন থেকে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে নাহিদের নাম।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমরা যতটুকু জেনেছি, নাহিদ নামে ছেলেটির কাছে বোধহয় একটি টিভি ক্যামেরা আছে। তিনি বিভিন্ন সময় মন্ত্রীকে উসকানিমূলক কথা বলেছেন। তার বিষয়ে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি।অভিযোগ-ওই সাক্ষাৎকারে প্রতিমন্ত্রীকে অশালীন মন্তব্য করার জন্য উসকানিমূলক একাধিক প্রশ্ন করেছেন নাহিদ। আর এসব অভিযোগের ভিত্তিতে নাহিদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিচ্ছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
তারেক রহমানের মেয়ের উদ্দেশে অশালীন ও বর্ণবাদী মন্তব্য ঘিরে যখন মুরাদ হাসানের তীব্র সমালোচনা চলছিল বিভিন্ন মহলে, তখনই ফাঁস হয় একটি অডিও রেকর্ড। ওই রেকর্ডে চিত্রনায়ক ইমন ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে অত্যন্ত অশালীন ও অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলতে শোনা যায় তাকে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন।
দেখা গেছে নাহিদ ক্ষমতাসীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে লাইভে নিয়ে এসে উস্কে দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে বিভিন্ন ধরণের কুরুচিপূর্ণ কথা বলেন। শুধু তাই নয় প্রতিমন্ত্রীর করা অশ্লীল মন্তব্যে বিভিন্ন প্রকার অশ্লিল অঙ্গভঙ্গি করে এই নাহিদ। সেই লাইভ এর ভিডিও ছোট ছোট কিরে বিভিন্ন ভাবে ছড়িয়ে দিতে থাকে অনলাইন জুড়ে। এরপর জনগণের তোপের মুখে প্রতিমন্ত্রী মুরাদকে যখন পদত্যাগের নির্দেশ দেয় হাসিনা, তখনই নিজে লাইভে এসে ক্ষমা চান। কিন্তু এর আগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে মুরাদ হাসানের অশ্লিল কথা প্রচার করে সত্য প্রমাণের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে এই ইউটিউবার।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে নাহিদ রেইন্স যার পুরো নাম নাহিদ করিম হেলাল। বিভিন্ন সময় বিতর্কিত ভিডিও তৈরী করে নিজের দিকে মানুষকে প্রলুদ্ধ করত এই নাহিদ। তার জন্য মূল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতো (Bangladeshism) এবং (NahidRains Pictures) নামে তার দুটি ফেইসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেল। বিভিন্ন সময় তার মতাদর্শের ভিত্তিহীন ভিডিও তৈরী করে জনগণের তোপের মুখেও পড়েছেন তিনি। এছাড়া নারী কেলেঙ্কারি, টাকা আত্মসাৎ, জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত এই নাহিদ হেলাল।