চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে অশ্লীল কথোপকথনের রেকর্ড ফাঁসের রাতেই ঢাকা ছাড়েন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। গতকাল সোমবার গোপনে চট্টগ্রামে পাঁচতারকা হোটেল রেডিসন ব্লু উঠেছিলেন তিনি। ওই দিন রাতেই কাউকে কিছু না জানিয়ে হোটেল ছেড়ে চলে গেছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে কোনো প্রটোকল ছিল না বলে হোটেল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মুরাদ হাসান বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনায় ছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তাঁর নাতনিকে নিয়ে অশালীন মন্তব্যে করায় কয়েক দিন হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছিল। এর আগে তিনি রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে বক্তব্য দিয়েও আলোচনায় আসেন।
এরপর গত সোমবার অভিনেত্রী মাহিয়া মাহির সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর একটি কল রেকর্ড ভাইরাল হয়। যেখানে তিনি নোংরা ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন। একই সঙ্গে তাঁকে হুমকিও দেন। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিভিন্ন মহল থেকে তাঁকে বহষ্কারের দাবি ওঠে। নারী, বেগম খালেদা জিয়া ও জাইমা রহমান ইস্যুতে বহিষ্কারের দাবি জানায় বিএনপি। এদিকে ডা. মুরাদ হাসানের সাম্প্রতিক আলোচিত বক্তব্যকে কুরুচিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জানা যায়, তথ্য প্রতিমন্ত্রীর চট্টগ্রামে আসার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোকেও অবহিত করা হয়নি। এ বিষয়ে অবগত না থাকায় তাঁকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কোনো প্রটোকলও দেওয়া হয়নি।রেডিসন ব্লু বে ভিউ হোটেলের ব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা রাফাত সালমান বলেন, উনি দুপুর (সোমবার) নাগাদ আমাদের হোটেলে এসেছিলেন। ওনার জন্য একটি রুম বুকড (অগ্রিম ভাড়া) করা ছিল।সেখানেই ওঠেন তিনি। তবে মধ্যরাতের আগে কাউকে কিছু না বলে তিনি চলে যান।
আমাদের অভ্যর্থনার দায়িত্বে থাকা কেউই ওনার হোটেল ছাড়ার বিষয়টি জানতেন না। হোটেল সূত্র বলেছে, ডা. মুরাদ হাসান হোটেলের এক রাতের বিল আগেই পরিশোধ করেছিলেন। রাতে হোটেল থেকে বের হওয়ার সময় নিয়মানুযায়ী চেকআউট করার কথা থাকলেও তিনি তা না করেই চলে গেছেন। তবে বিদ্যুৎ বড়ুয়া নামে তাঁর এক বন্ধুর একটি অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রীর যাওয়ার কথা ছিল।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার দুপুরে বিমানে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান। তবে বিমানবন্দরে দায়িত্বরতদের এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, সিটি এসবির পক্ষ থেকে প্রতিমন্ত্রীর প্রটোকলের বিষয়টি জানানো হয়নি। এ জন্য আমরা ওনার কোনো প্রটোকলের দায়িত্বে ছিলাম না।