কেন মন্ত্রিত্ব গেল মুরাদ হাসানের?
তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর এ তথ্য জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলা হচ্ছে, নৈতিক স্খলনের জন্য মন্ত্রিত্ব গেল তথ্য প্রতিমন্ত্রীর। বেশ কয়েক দিন ধরেই আলোচনার মধ্যে ছিলেন মুরাদ হাসান। সম্ভবত সামাজিক মাধ্যমে ভাইরালের নেশা তাঁকেও পেয়ে বসেছিল। ফলে ধারাবাহিকভাবে ভাইরাল হচ্ছিলেন।
নাহিদ নামের এক উপস্থাপকের সঞ্চালনায় প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বিএনপি নেত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং তাঁর কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে যা বলেছেন, তা কেবল শিষ্টাচারবহির্ভূত বলা ভুল হবে। বলা যায়, তা ছিল বিকৃত মানসিকতার প্রতিফলন। কিন্তু বিএনপি নেত্রী ও তাঁর পরিবার নিয়ে কথা বলার জন্য কারও পদ যাওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। সুতরাং খালেদা জিয়া ও জাইমা রহমানকে নিয়ে মুরাদ হাসানের বক্তব্য নৈতিক স্খলনের মধ্যে পড়বে কি না, সে প্রশ্ন করাই যায়।
চিত্রনায়িকা মাহিকে টেলিফোনে যে ভাষায় কথা বলেছেন, যেভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যেভাবে ভয় দেখিয়েছেন, যেসব ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন, তার সবটাকেই নৈতিক স্খলনের মধ্যে আনা যায়। শুরুতে কণ্ঠ শুনে ব্যক্তিদের পরিচয় অনুমান করতে হয়েছে। পরে অবশ্য অভিনেতা ইমন গণমাধ্যমে স্বীকার করেছেন যে এই কণ্ঠ তাঁর, মাহিয়া মাহি ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের।সুতরাং সরকার থেকে যে নৈতিক স্খলনের কথা বলা হচ্ছে, সেটা কি এই টেলিফোন আলাপ?
তিনি যত ধরনের কথা বলেছেন, তার বড় অংশই প্রকাশযোগ্য নয়। তিনি প্রকাশ্যে, জেনেশুনে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তার অনেক কিছু এতটাই অশ্লীল যে তা একেবারেই অপ্রকাশযোগ্য। আবার চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে যে টেলিফোন আলাপ ফাঁস হয়েছে, সেসব কথাবার্তা প্রকাশযোগ্য নয়। মুরাদ হাসান সেই বিরল ব্যক্তিদের একজন, যাঁর প্রকাশ্য বা গোপন কথাবার্তা, কোনোটাই জনসম্মুখে আনার মতো নয়।
আবার ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া এবং শামসুন নাহার হলের ছাত্রলীগ নেত্রীদের সম্পর্কেও কথা বলতে শোনা গেছে। এই বক্তব্যে দলের নারীনেত্রীরাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন, প্রতিবাদও করেছেন। নিজের দলের নেত্রীদের সম্পর্কেই যাঁর এই ধারণা ও মনোভাব, তাঁর সঙ্গে এক টেবিলে বসে দল করা অন্যদের জন্য বেশ কঠিন। এ কারণেই কি চাকরি গেল তথ্য প্রতিমন্ত্রীর?