নরসিংদীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন গুলিবিদ্ধ

নরসিংদীর রায়পুরার চানপুর ইউনিয়নের কুড়েরপাড় গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় টেঁটাবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে চানপুরের কুড়েরপাড় গ্রামের মেঘনা নদীর তীরে র‌্যাব সদস্যদের উপস্থিতিতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছোড়ে র‌্যাব।গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিরা হলেন কুঁড়েরপাড় গ্রামের হানিফ হোসেনের ছেলে সৈয়দ হোসেন (৪০), রশিদ মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (৪৫), জুলহাস মিয়ার ছেলে কালন মিয়া (২৫) ও নবু মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া (২৭)। তাঁদের রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

শনিবার রাত সাড়ে আটটায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন রায়পুরা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সত্যজিৎ কুমার ঘোষ। তিনি জানান, একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দীর্ঘদিন ধরে এলাকাছাড়া কিছু লোক র‌্যাবের সহযোগিতায় এলাকায় ঢুকতে যাচ্ছিলেন। এ সময় অপর পক্ষের লোকজনের বাধার কারণে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্যে ছররা গুলিতে চারজন বিদ্ধ হয়েছেন বলে খবর পেয়েছেন। তবে র‌্যাবের কোনো সদস্যের আহত হওয়ার অভিযোগ পাননি।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে কুঁড়েরপাড় গ্রামে আলমগীর হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ২৯ সেপ্টেম্বর নিহতের ভাই জুলহাস মিয়া বাদী হয়ে ২৩ জনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এই ঘটনায় আসামিপক্ষের লোকজন এলাকাছাড়া হয়ে যান। এলাকাছাড়া ব্যক্তিদের কয়েকজন র‌্যাব–১১ নরসিংদীর একটি দলের সহায়তায় শনিবার সকালে একটি স্পিডবোটে করে কুঁড়েরপাড় যান।

স্পিডবোট থেকে নামার পর নিহত আলমগীর পক্ষের লোকজন তাঁদের গ্রামে প্রবেশে বাধা দেয়। ওই সময় র‌্যাব সদস্যরা হ্যান্ডমাইকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করার অনুরোধ করেন। কিন্তু অনুরোধ উপেক্ষা করে র‌্যাব ও সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর হামলা করে বসেন তাঁরা। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে গেলে ৪ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।

এ বিষয়ে র‌্যাব–১১–এর অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা বলেন, র‌্যাব নরসিংদীর একটি টিম সেখানে গিয়েছিল। যাওয়ার পর সেখানকার স্থানীয় কিছু লোক টেঁটা, বল্লম ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য তাঁরা ফাঁকা গুলি ছুড়েন। তাঁদের গুলিতে কেউ আহত হওয়ার খবর শোনেননি, র‌্যাবের কোনো সদস্যও আহত হননি। এই ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু সায়ীদ মো. ফারুক জানান, এই ঘটনায় ছররা গুলিবিদ্ধ চারজনসহ বেশ কয়েকজন আহত ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। পরে সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁদের রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে শুনেছেন।

Exit mobile version