বাসা ভাড়া নেওয়ার পর ঘরে মিলল নারীর লাশ

‘টিনশেড ঘর ভাড়া দেওয়া হবে’—এমন বিজ্ঞাপন দেখে দুপুরে ভাইবোন পরিচয় দিয়ে ঘর ভাড়া নেন এক নারী ও এক পুরুষ। সন্ধ্যায় ওই ঘরেই পাওয়া গেল সেই নারীর লাশ। ওই নারীর সঙ্গে থাকা পুরুষও পলাতক। রাজধানীর ভাটারার নুরের চালা এলাকায় শুক্রবার এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ বলছে, ওই নারীর সঙ্গে থাকা পুরুষ সঙ্গী তাঁকে (ওই নারী) হত্যা করে পালিয়ে গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে। আজ রাতে পুলিশ ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।

ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুর রহমান বলেন, দুপুরে যখন বাড়িওয়ালা ঘরটি তাঁদের জিম্মায় ছেড়ে দেন, তখন ওই নারী ঘরটি পরিষ্কার করছিলেন। পুরুষ লোকটি তাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাড়িওয়ালা সেখান থেকে চলে আসার কিছুক্ষণ পর পুরুষ লোকটি বাইরে যান। তখন বাড়িওয়ালা ভেবেছিলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি এবং অগ্রিম টাকা আনতে যাচ্ছেন। একটু পর লোকটি আবারও ফিরে আসেন।

তবে বিকেল পর্যন্ত তাঁদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যায় বাড়িওয়ালা সেই ঘরে গিয়ে দেখেন, ওই নারী অচেতন অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন। সাড়া না পেয়ে তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। ওসি বলেন, ওই নারীর সঙ্গে থাকা কথিত ভাই তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তিনি কখন পালিয়ে গেছেন, সেটি কেউ দেখেননি।

পুলিশ জানায়, ভাড়া নেওয়ার সময় তাঁরা নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন সম্পর্কে ভাই ও বোন হিসেবে। বাসায় থাকবেন বোন। শুক্রবার দুপুরে পাঁচ হাজার টাকায় ঘরটি ভাড়াও নেন তাঁরা। বিকেলে জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি এবং অগ্রিম টাকা পরিশোধ করবেন বলেও বাড়িওয়ালাকে জানান। তবে ঘরটি অপরিষ্কার থাকায় সেটি তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার করতে চান। বাড়িওয়ালা এতে রাজি হন এবং ঘরটি ছেড়ে দেন।

পুলিশ জানায়, ওই নারীর গলায় ওড়না প্যাঁচানো ছিল। লাশের অবস্থা দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে ওই নারীকে খুন করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারী এবং তাঁর সঙ্গে আসা পুরুষ লোকটির পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁদের দুজনের সম্পর্ক কী, সেটিও জানার চেষ্টা চলছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ওই নারী দিনমজুরের কাজ করেন।

এদিকে রাতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ওই নারীর পরিচয় নিশ্চিতে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেছে। থানা-পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনার ছায়া তদন্ত করছে।

Exit mobile version