অপরাধকুমিল্লাবাংলাদেশ

‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত কুমিল্লায় কাউন্সিলর হত্যা মামলার ২ আসামি

কুমিল্লা সিটি কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ সাহা হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। নগরীর সংরাইশ এলাকায় গোমতী নদীর পাড়ে গতকাল সোমবার দিবাগত গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হল- মামলার এজাহারভুক্ত ৩ নম্বর আসামি মো. সাব্বির হোসেন ও ৫ নম্বর আসামি মো. সাজন। নিহত সাব্বির নগরীর সুজানগর এলাকার রফিক মিয়ার ছেলে এবং সাজন নগরীর সংরাইশ এলাকার কাকন মিয়ার ছেলে। 

কুমিল্লা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক পরিমল দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেন।তিনি জানান, ‘কাউন্সিলর সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ হত্যা মামলার দুই আসামি সংরাইশ ও নবগ্রামে অবস্থান করছে, এমন তথ্যে সেখানে অভিযান চালানো হয়। এতে অংশ নেয় কোতয়ালি মডেল থানা ও ডিবি পুলিশের একাধিক টিম।

নিহতদের মধ্যে সাব্বিরের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় দুটি হত্যা মামলা ও সাজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যাসহ বিস্ফোরক আইনে ২টি মামলা রয়েছে। তবে জেলা ডিবি পুলিশের এসআই পরিমল চন্দ্র দাস সাংবাদিকদের জানান, নিহতদের বিরুদ্ধে হত্যা ও মাদকসহ অন্তত ৭-৮টি করে মামলা রয়েছে।

সংরাইশ গোমতী নদীর বেড়িবাঁধের কাছে ডিবি ও থানা পুলিশের টিম পৌঁছালে আসামিরা এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করেন। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাদেরকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি পাইপ গান, তাজা গুলি ও গুলির খোসা জব্দ হয়েছে। স্থানীয়রা তাদেরকে কাউন্সিলর সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ হত্যার আসামি বলে শনাক্ত করেন। সন্ত্রাসীদের গুলিতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অভিযানের সময় সন্ত্রাসীদের হাতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি পুলিশের। তাদের পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি পাইপ গান, তাজা গুলি ও গুলির বেশ কিছু খোসা জব্দ করেছে। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সিসিটিভির ফুটেজে কাউন্সিলরের কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া হিট স্কোয়াডের যে ৬ জনের পরিচয় সনাক্তকরণের দাবি করা হয়েছিল ‘বন্দুক যুদ্ধে’ নিহত সাব্বির ও সাজন তাদের মধ্যে অন্যতম। 

সাব্বির হোসেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র সোহেলসহ জোড়া খুনের মামলায় ৩ নম্বর আসামি। তার পিতার নাম রফিক মিয়া। বাড়ি সুজানগর পানির ট্যাঙ্কির পাশে। আরেকজন সাজন একই মামলার ৫ নম্বর আসামি। তার পিতার নাম কাকন মিয়া। সংরাইস রহিম ডাক্তারের গলিতে তার বাড়ি।

কোতয়ালি মডেল থানার ওসি আনয়ারুল আজিম জানান, অস্ত্র-গুলি উদ্ধার, পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা-নিহতের ঘটনায় থানায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক মামলা রুজু হয়েছে। নিহত সাব্বির ও সাজনের লাশ কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার বিকালে তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের লাশ দাফনের সময় এলাকায় পুলিশের কড়া নজরদারী ছিল। এছাড়া কাউন্সিলর ও তার সহযোগী হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হচ্ছে, মো. সুমন, মো. মাসুম, আশিকুর রহমান রকি, আলম মিয়া, জিসান মিয়া ও রাব্বি ইসলাম ওরফে অন্তু।

উল্লেখ্য, গত ২২ নভেম্বর বিকালে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেলের পাথুরিয়াপাড়া থ্রি-স্টার এন্টারপ্রাইজের কার্যালয়ে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ ঘটনায় কাউন্সিলর সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ সাহা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন পাঁচজন। এ ঘটনায় কুমিল্লাসহ দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। হত্যার ঘটনায় ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ আলমকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়। অজ্ঞাত আসামি করা হয় ১০-১২ জনকে।

Back to top button