রাজধানীর রামপুরায় বাসচাপায় নিহত শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিন ইসলাম দুর্জয়ের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদরের বৈকালবাজার হাটখোলা জামে মসজিদ–সংলগ্ন কবরস্থানে আজ মঙ্গলবার রাত আটটায় তাকে দাফন করা হয়।অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তার লাশ নিয়ে আসা থেকে শুরু করে দাফন পর্যন্ত পুলিশ সতর্ক অবস্থায় ছিল। রাত পৌনে আটটায় বৈকালবাজার হাটখোলা জামে মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ঢাকা থেকে তার লাশ সরাইলে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। শিক্ষার্থী দুর্জয়কে শেষবারের মতো দেখতে স্বজনসহ আশপাশের অসংখ্য মানুষ ভিড় করে। লাশ দাফনে অংশ নিতে ঢাকা থেকে তার শতাধিক বন্ধু, সহপাঠী বিভিন্ন যানবাহনে করে সরাইলে পৌঁছায়।
দুর্জয়ের বাবা আবদুর রহমান রামপুরায় একটি চায়ের দোকান চালান। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে দুর্জয় সবার ছোট। পরিবারে আর্থিক অনটন থাকায় পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে বাবার সঙ্গে চায়ের দোকানে বসত সে। তাদের গ্রামের বাড়ি সরাইলের হালুয়াপাড়া গ্রামে।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রামপুরায় রাস্তা পার হওয়ার সময় দুটি বাসের প্রতিযোগিতায় চাপা পড়ে নিহত হয় দুর্জয়। সে এ বছর একরামুন্নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।দুর্জয়ের খালাতো ভাই খোরশেদ আলম জানান, প্রায় ১৬-১৭ বছর আগে আবদুর রহমান গ্রামের সব জমি বিক্রি করে ঢাকায় চলে যান।
তবে কয়েক বছর আগে হালুয়াপাড়া গ্রামে আবার দুই শতাংশ জমি কিনেছেন আবদুর রহমান। দুর্জয় ও তার পরিবারের লোকজন ঢাকা থেকে সরাইলে এলে তাঁদের বাড়িতেই বেশি থাকতেন। তাই এখন নানা-নানির কবরের পাশেই দুর্জয়ের লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে হালুয়াপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, দুর্জয়ের স্বজনেরা বিলাপ করছেন। সড়ক দুর্ঘটনায় মেধাবী দুর্জয়ের অকাল মৃত্যুতে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আজ রাতে এশার নামাজের পর হাটখোলা জামে মসজিদে তার দ্বিতীয় জানাজা হবে। পরে ওই মসজিদ–সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হবে। এর আগে রামপুরা তিতাস রোডে গনিবাগ জামে মসজিদ মাঠে তার প্রথম জানাজা হয়েছে।