লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়া
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। তাঁর পরিপাকতন্ত্রে তিনবার রক্তক্ষরণ হয়েছে।খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড আজ রোববার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানায়। মেডিকেল বোর্ড দ্রুত খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সুপারিশ করে বলেছে, তাঁর এই চিকিৎসা শুধু বিশ্বের তিনটি দেশেই সম্ভব। এখনই চিকিৎসা দিতে না পারলে খালেদা জিয়ার অবস্থা ‘লাইফ থ্রেটেনিং’।
লিভার সিরোসিসের কারণে তার ব্লিডিং হচ্ছে উল্লেখ করে তারা দ্রুত খালেদা জিয়াকে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা জার্মানির বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুপারিশ করেছেন।চিকিৎসকরা জানান, বিএনপি নেত্রীর যকৃত বা লিভারে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। একবার এই রক্তক্ষরণ সামাল দেওয়া গেছে।তবে এখন তার যে অবস্থা, সেটি দ্বিতীয়বার সামাল দেওয়া কঠিন হবে। বাংলাদেশে দু-তিনবার রক্তক্ষরণ সামাল দেওয়ার কারিগরি সুযোগ নেই দাবি করে তারা যত দ্রুত সম্ভব তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ডের অন্যতম চিকিৎসক ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকীসহ উপস্থিত ছিলেন এ কে এম মহসিন, সামসুল আরেফিন, নূর উদ্দিন আল মামুন এবং এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার পরিস্থিতি তুলে ধরেন ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস হয়েছে। তাঁর এ পর্যন্ত তিন দফায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। তৃতীয়বার রক্তক্ষরণ অনেক বেশি ছিল। লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেছে।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ফখরুল মোহাম্মদ সিদ্দিকী (এফ এম সিদ্দিকী বলেন,‘খালেদা জিয়ার পেট থেকে চাকা চাকা রক্ত যাচ্ছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইউনাইটেড হাসপাতালে একবার রক্ত দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের রোগীকে বারবার রক্ত দেওয়া সম্ভব নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, খালেদা জিয়ার লিভারে পরিপাকীয় চাপ কমাতে বাইপাস প্রক্রিয়া সঞ্চালন নালি তৈরি করতে হবে। এটি টিপস (টিআইপিএস—ট্রানজুগুলার ইন্ট্রাহিপারটিপ পোর্টো সিস্টেমিকশন) পদ্ধতিতে করা হয়, যে প্রযুক্তি শুধু যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রেই সম্ভব। দ্রুত এই সঞ্চালন নালি করা না গেলে খালেদা জিয়ার লিভারে রক্তক্ষরণঝুঁকি এক সপ্তাহে ৫০ ভাগ বাড়বে, পরবর্তী ৬ সপ্তাহে সেই ঝুঁকি বাড়বে ৭০ শতাংশ। এরপর চিকিৎসকদের আওতায় না-ও থাকতে পারে। মেডিকেল বোর্ড জানায়, এখন যেহেতু রক্তক্ষরণ বন্ধ আছে, তাই এখনই বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিতে হবে। নয়তো পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া জটিল হয়ে যাবে।