হানিফ পরামর্শ দিলেন রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিএনপি নিজেই সবচেয়ে বড় বাধা- এমন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, যদি সত্যিকার অর্থেই বিএনপি মনে করে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রয়োজন, যথাযথ চিকিৎসা এখানে হচ্ছে না, আরও উন্নত চিকিৎসা দরকার; তাদের উচিত ছিল রাজনীতি না করে তার জীবন বাঁচানোর জন্য আইনের যে একটা পথই এখন খোলা আছে, তা অনুসরণ করা। উনি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন। যদি দণ্ড মওকুফ হয়ে যায়, তখন তিনি স্বাধীনভাবে যেকোনো জায়গায় যেতে পারেন।শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাহবুব উল আলম বলেন, বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, এটা সত্য। বিএনপির মতো দলের চেয়ারপারসন, সেটাও সত্য। কিন্তু পাশাপাশি এটাও সত্য তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত একজন কয়েদি। অতএব একজন দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি কারাবরণ অবস্থায় যত সুযোগ-সুবিধা কারাবিধি অনুযায়ী প্রাপ্য, তা পাবেন।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা বলেছেন, রাষ্ট্রপতি যদি বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে পারেন, আমাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যদি যেতে পারেন, তাহলে খালেদা জিয়া কেন পারবেন না? তিনি পারবেন না এই কারণে, রাষ্ট্রপতি ও ওবায়দুল কাদের কেউ দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছাড়া যে কেউ তার ইচ্ছেমতো চিকিৎসা নিতে পারবেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির ক্ষেত্রে সেই সুযোগ নেই। এটা তুলনা করা অন্ধ বা মানুষকে বিভ্রান্ত করার মতো।
খালেদা জিয়া অনেক সৌভাগ্যবান—উল্লেখ করে মাহবুব উল আলম আরও বলেন, ‘উনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবতায় কারাবিধির বাইরে সব সুযোগ-সুবিধা লাভ করেছেন। যেমন উনার সেবা–শুশ্রূষার জন্য একজন নিরপরাধ পরিচারিকা দেওয়া হয়েছিল; তাঁদের দাবি অনুযায়ী। কারাবিধি অনুযায়ী পৃথিবীতে এমন নজির নেই। আজ প্রধানমন্ত্রীর মানবিকতা ও নির্বাহী ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহারে দণ্ড স্থগিত হয়ে খালেদা জিয়া বাড়িতে অবস্থান করছেন, চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন তাঁর ইচ্ছেমতো। সে জায়গায় বিএনপি তাঁকে বিদেশে পাঠানোর দাবি তুলছে ও বিভিন্ন সময় রেফারেন্স দিচ্ছে অযৌক্তিকভাবে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আজকে তাঁর (খালেদা জিয়া) চিকিৎসা, জীবনটা বড়, নাকি রাজনীতির স্ট্যান্ডবাজিটা বড়। বিএনপি আজ রাজনীতির স্ট্যান্ডবাজি করে যাচ্ছে। খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতা তাদের কাছে মুখ্য নয়। তাদের কাছে মুখ্য হচ্ছে রাজনীতি। তারা এটাকে ইস্যু করে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে একটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায়।
আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদবিরোধী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম ‘বিশ্ব সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও হোলি আর্টিজান-মুম্বাই হামলা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। সংগঠনটির সভাপতি কবীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে অংশ নেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান প্রমুখ।