এক্সক্লুসিভবিশ্ব সংবাদ

ভয়াবহ বায়ু দূষণে বন্ধ ঘোষণা দিল্লির সব স্কুল-কলেজ

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে দিনকে দিন চরম অবনতির দিকে যাচ্ছে বাতাসের মান। বায়ুদূষণে জেরবার এ শহর ও আশপাশের এলাকাগুলোতে পরিস্থিতি সামাল দিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল-কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। ২১ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সব ধরনের নির্মাণকাজ। একই সময় পর্যন্ত সরকারি অফিসগুলোতে ৫০ শতাংশ কর্মচারীর বাসা থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দিল্লির দূষণের ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে করণীয় নিয়ে সরকারি পর্যায়ে আলোচনা চলছে কয়েকদিন ধরেই। দূষণের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে দিল্লি এবং আশপাশের শহরের স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করতে হলো। মঙ্গলবার গভীর রাতে জানিয়েছে কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট (সিএকিউএম)। তবে কোভিডের সময় অনলাইনে যেভাবে ক্লাস চলতো সেভাবেই ফেরার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে দিল্লি ও আশপাশের অঞ্চলগুলোর বায়ুমান ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত কমিশন-সিএকিউএম এসব নির্দেশনা জারি করে। নির্দেশনা অনুযায়ী, জরুরি পণ্য সরবরাহকারী পরিবহন ছাড়া কোনো ট্রাক ২১ নভেম্বর পর্যন্ত দিল্লিতে প্রবেশের অনুমতি পাবে না। পরিস্থিতি বুঝে বাড়ানো হতে পারে এ সময়সীমাও।

সিএকিউএমের আওতায় রয়েছে দিল্লি ছাড়াও উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও রাজস্থান। এসব রাজ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ৫০ শতাংশ কর্মীকে বাসা থেকে কাজ করার জন্য জোর দেওয়া হয়েছে সিএকিউএমের নির্দেশনায়।

দূষণ কমাতে দিল্লির ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যের ছয়টি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।সিএকিউএমের নির্দেশনা অনুযায়ী, দূষণ নিয়ন্ত্রণে দিনে তিনবার পানি ছিটানোসহ নানা ব্যবস্থা নিতে হবে। রাস্তার ওপর নির্মাণ সরঞ্জাম রাখলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। আবর্জনা রাখলেও মিলবে একই ধরনের শাস্তি। জরুরি কারণ ছাড়া চালু করা যাবে না ডিজেলচালিত জেনারেটর।

এদিকে প্রতিবারের মতো এবারও দিল্লির দূষণের জন্য প্রতিবেশী রাজ্যের কৃষকদের ফসলের গোড়া পোড়ানোকে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার দায়ী করলেও কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে পাল্টা হলফনামায় জানায়, সারা বছরে দিল্লির কেবল ১০ শতাংশ বায়ু দূষণের কারণ হল ফসলের গোড়া পোড়ানো ধোঁয়া। মূল কারণ কলকারাখানার বর্জ্য ও গ্যাস, যানবাহনের ধোঁয়া এবং রাস্তার ধুলো।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগের পরামর্শের জেরে সিএকিউএম এসব নির্দেশনা জারি করেছে। আবহাওয়া বিভাগের হিসাব–নিকাশ বলছে, আগামী কয়েক দিন দিল্লি অঞ্চলের বাতাসের মান খারাপ থাকতে পারে। গড়াতে পারে মারাত্মক পর্যায়েও। তবে ২১ নভেম্বরের পর পরিস্থিতি ভালোর দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল বায়ুমান সূচকে দিল্লির স্কোর ছিল ৫০০-এর মধ্যে ৪০৩। এর অর্থ বাতাসের দূষণের অবস্থা মারাত্মক।

Back to top button