উত্তর কোরিয়ায় দুর্ভিক্ষের আভাস
উত্তর কোরিয়ায় খাদ্য সংকটের তীব্রতা বাড়ছে। শীত যত ঘনিয়ে আসছে দেশটিতে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা ততোই বাড়ছে। উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিরা এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।দক্ষিণ কোরিয়া থেকে প্রকাশিত ডেইলি এনকের প্রধান সম্পাদক লি সাং ইয়োং বলেছেন, ‘আরও অনাথ শিশুর সড়কে আশ্রয় নেওয়ার এবং ক্ষুধায় মৃত্যুর মতো সমস্যাগুলোর সংবাদ প্রতিনিয়ত আসছে। উত্তর কোরিয়ার নিম্নবিত্তের মানুষেরা অনেক বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।’
উত্তর কোরিয়ার মধ্য থেকে তথ্য পাওয়া খুবই কঠিন। এরমধ্যে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে দেশটির সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। চীনে কোভিড-১৯ সংক্রমণের খবর নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। এরপর থেকেই বিশ্ব থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন রয়েছে দেশটি। এমনকি দক্ষিণ কোরিয়ায় আশ্রয় নেয়াররাও খুব সামান্যই খবর পাচ্ছেন উত্তরে থাকা আত্মীয়দের থেকে।চলতি বছর উত্তর কোরিয়ায় চাষাবাদ ভালো হয়নি। গত বছর ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ফসল উৎপাদন ব্যহত হয়েছিল। জাতিসংঘের হিসেবে, দেশটিতে দুই থেকে তিন মাসের খাদ্যঘাটতি রয়েছে।
দেশটির যে কোনো নাগরিকের কাছ থেকে অননুমোদিত মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে তাকে শাস্তি হিসেবে শ্রম শিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে কেউ কেউ পলাতক স্বজনদের কাছে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে থাকেন।আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার পর উত্তর কোরিয়ায় প্রায়ই খাদ্য সংকট দেখা দেয়। তবে করোনা মহামারির পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হচ্ছে। দেশটির শীর্ষনেতা কিম জং উন পরিস্থিতিকে ১৯৯০ সালের দুর্ভিক্ষের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ওই সময় দুর্ভিক্ষে দেশটিতে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
উত্তর কোরিয়া এখন আবারো চীনের সঙ্গে সীমান্ত খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে করে দেশটির অর্থনীতিতে গতি আসবে। একইসঙ্গে বাইরে থেকে ত্রাণ ও সাহায্যও ঢুকবে। তবে তাতে শেষ রক্ষা হবে কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়। জাতিসংঘ বলছে, উত্তর কোরিয়ায় প্রায় ৩ মাসের খাদ্য ঘাটতি রয়েছে। খাদ্য উৎপাদন করতে এ বছর আর্মি পর্যন্ত মাঠে নামানো হয়েছিল।