নবজাতক আয়ানের বয়স ১৬ দিন। ইদ্রিস মিয়া ও সাকিলা বেগম দম্পতির প্রথম সন্তান আয়ান। আজ শুক্রবার দুপুরে নিজ ঘরে আয়ানকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন মা সাকিলা। দুপুরের রান্না শেষ করা নিয়ে ব্যস্ত দাদি শামসুন্নাহার বেগম। রান্না শেষে ঘরে এসে শামসুন্নাহার দেখতে পান সাকিলা ঘুমিয়ে থাকলেও পাশে আয়ান নেই। শুরু হয় আয়ানের সন্ধান। পরে দেখা যায়, শৌচাগারে রাখা বালতির পানিতে আয়ানকে ডুবিয়ে রাখা হয়েছে।হাসপাতালে নেওয়ার পর জানা যায় আয়ানের মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের চিকিৎসক স্বপ্না রানী দত্ত বলেন, ‘আমরা নবজাতকটিকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। পানিতে ডুবে থাকার কারণে মৃত্যু হয়েছে। নবজাতকটির অস্বাভাবিক মৃত্যু হওয়ার কারণে আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি। পরে পুলিশ এসে মৃত নবজাতকটিকে নিয়ে যায়।’
সাকিলার দিন কাটে আয়ানের দেখাশোনা করে। দুপুর ১২টার দিকে আয়ান ঘুমিয়ে পড়ে। তখন আয়ানকে জড়িয়ে ধরে সাকিলাও ঘুমিয়ে যান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আয়ানের দাদি রান্নাঘর থেকে এসে দেখতে পান সাকিলার পাশে আয়ান নেই।সাকিলাকে জাগান শামসুন্নাহার বেগম। দুজনই চিৎকার শুরু করেন। তাঁদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন এবং আয়ানের সন্ধান করতে থাকেন। একপর্যায়ে শৌচাগারে গিয়ে দেখতে পাওয়া যায়, বালতির পানিতে আয়ানকে ডুবিয়ে রাখা হয়েছে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইদ্রিস পেশায় টিভি মেকানিক। সাকিলার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে। দেড় বছর আগে তাঁরা বিয়ে করেন। আয়ান তাঁদের প্রথম সন্তান। ১৪ দিন আগে স্বাভাবিক প্রসব হয়। ইদ্রিসের বসতঘরটি টিনশেডের। শৌচাগারটি ঘরের সঙ্গে যুক্ত। তবে ঘর থেকে বের হয়ে বারান্দা দিয়ে শৌচাগারে আসা–যাওয়া করতে হয়।
বারবার অচেতন হয়ে পড়ার কারণে এই বিষয়ে মা সাকিলার সঙ্গে কথা বলা যায়নি। আয়ানের দাদি শামসুন্নাহার বলেন, ‘আমার চোখের আড়াল হওয়ার সর্বোচ্চ আধা ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে কে বা কারা এবং কী কারণে নবজাতকের সঙ্গে এমন হিংস্র আচরণ করল, এর কিছুই ধারণা করতে পারছেন না শামসুন্নাহার।বাবা ইদ্রিস মিয়ারও একই ভাষ্য।নবজাতক হত্যার খবর জেনে হাসপাতালে আসেন ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, নবজাতকের মৃত্যুটি অস্বাভাবিক ও রহস্যজনক। এই কারণে ময়নাতদন্ত করা হবে।