গ্লাসগোতে চলমান জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৬) এ প্রতিশ্রুতি এসেছে বলে যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে।জলবায়ু পরিবর্তনে এককভাবে কয়লার অবদান সবচেয়ে বেশি। কিন্তু তারপরও অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো সবচেয়ে বড় কিছু কয়লানির্ভর দেশ এ প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করেনি বলে জানিয়েছে বিবিসি।এই সমঝোতায় স্বাক্ষরকারীরা অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে সব ধরনের বিনিয়োগ বন্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।
কয়লার ব্যবহার বন্ধে প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করেছে পোল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং চিলিসহ ১৯০টি দেশ ও সংস্থা। বিশ্বে এই সব দেশই সবচেয়ে বেশি কয়লার ব্যবহার করে।যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, তারা বড় অর্থনীতির দেশগুলোর ক্ষেত্রে ২০৩০ এর দশকের মধ্যে এবং দরিদ্র দেশগুলোর ক্ষেত্রে ২০৪০ এর দশকের মধ্যে জ্বালানি হিসেবে কয়লার ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বন্ধ হতে সম্মত হয়েছে।
দেশটির বাণিজ্য ও জ্বালানিমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ারটেং বলেছেন, “কয়লার শেষ দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। বিশ্ব সঠিক দিকে যাচ্ছে, কয়লার ভাগ্য সিল করে দিতে আর দুষণমুক্ত শক্তি চালিত একটি ভবিষ্যৎ নির্মাণে পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক সুবিধাকে বরণ করতে প্রস্তত হয়েছে।”
যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ার্টেং বলেন, কয়লার ব্যবহারের শেষ দেখা যাচ্ছে। পৃথিবী সঠিক পথে এগোচ্ছে, কয়লার ব্যবহার বন্ধের জন্য বিশ্ব প্রস্তুত।যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ৪০টির বেশি দেশ কয়লার ব্যবহার বন্ধের প্রতিশ্রুতি স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্যে পোল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং চিলিসহ ১৮টি দেশ রয়েছে যারা এই সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি প্রথমবারের মতো স্বাক্ষর করল।
কিন্তু যুক্তরাজ্যের ছায়া বাণিজ্যমন্ত্রী বিরোধী লেবার দলীয় এমপি এড মিলিব্যান্ড বলেছেন, চীন ও ভারতের মতো অন্যান্য প্রধান কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলো কয়লার ব্যবহার বাড়ানো বন্ধ করার কোনো প্রতিশ্রুতি না দেওয়ায় এখানে ‘ভয়ানক একটি ফাঁক’ রয়ে গেছে।
তেল ও গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি ধাপে ধাপে বন্ধ করার কোনো আশ্বাসও সমঝোতায় নেই বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।যুক্তরাজ্য সরকার ‘অন্যদের সমস্যায় পড়া থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন মিলিব্যান্ড।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের নাটকীয় বৃদ্ধি ঘটলেও বিশ্ব অর্থনীতি এখনও বিদ্যুতের জন্য কয়লার ওপরই নির্ভরশীল।বিপি স্ট্যাটিস্টিক্যাল রিভিউয়ের তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালে বিশ্বের মোট বিদ্যুতের ৩৭ শতাংশ এসেছে কয়লা থেকে, প্রায় ২৫ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে, ১৬ শতাংশ নদীর বাঁধগুলো থেকে, ১০ শতাংশ পারমাণবিক ও ১২ শতাংশ সৌর ও বায়ুর মতো নবায়ণযোগ্য উৎসগুলো থেকে।