স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে শুরু হয়েছে ‘কপ২৬’ জলবায়ু সম্মেলন। বহুল প্রতীক্ষিত এই সম্মেলনের ফলাফলে প্রভাব ফেলবেন—এমন শীর্ষ পাঁচজন বিশ্বনেতাকে ‘ডিলমেকারস’ হিসেবে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।বিবিসির বেছে নেওয়া এই তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিবেদনে তাকে ‘ঝুঁকিপূর্ণদের কণ্ঠস্বর’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।এতে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখোমুখি হওয়া ৪৮টি দেশের গ্রুপ ‘ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম’-এর পক্ষে কথা বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
‘জলবায়ু পরিবর্তন : চুক্তি প্রস্তুতকারক পাঁচজন, যারা কপ২৬ সম্মেলনের ফলাফল প্রভাবিত করবেন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বিবিসি বলেছে, পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, স্যার ডেভিড অ্যাটেনবোরো ও বিশ্ব নেতারা যখন বেশিরভাগ গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন, তখন ১৯৭টি দেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ করার প্রকৃত কাজটি পড়বে স্বল্প-পরিচিত কূটনীতিক, মন্ত্রী ও আলোচকদের ওপর।
শেখ হাসিনা একজন অভিজ্ঞ এবং স্পষ্টভাষী রাজনীতিবিদ উল্লেখ করে বিবিসি জানায়, গত বছর বাংলাদেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। সেই সময় দেশটিতে বন্যার কারণে ১০ লাখ বাড়ি-ঘর হুমকির মুখে পড়ে। কাজেই তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা ‘কপ২৬’ সম্মেলনে তুলে ধরবেন।
শেখ হাসিনা ছাড়াও বিবিসির এই তালিকায় রয়েছেন চীনের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত শি ঝেংহুয়া, সৌদি আরবের আয়মান শাসলি, যুক্তরাজ্যের পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী ও ‘কপ২৬’ সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট অলোক শর্মা এবং স্পেনের বাস্তুসংস্থান রূপান্তর মন্ত্রী তেরেসা রিবেরা।
কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. জেন অ্যালান বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হাসিনার মতো লোকজন জলবায়ু পরিবর্তনের এক মানবিক মুখ এবং জলবায়ু পরিবর্তন ইতিমধ্যে কী ধরনের রূপ ধারণ করেছে তা বুঝতে বিশ্ব নেতাদের সাহায্য করতে পারেন।’বিবিসি বলছে, বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর তালিকায় থাকা সত্ত্বেও জলবায়ুর ঝুঁকি এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর গ্রুপের আলোচনায় শক্তিশালী অবস্থানের রেকর্ড রয়েছে তাদের।
ড. জেন অ্যালান বলেন, ‘কারণ তারা শক্তিশালী এক নৈতিক কণ্ঠস্বর এবং সিদ্ধান্তগুলো ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেওয়া হয়। তারা জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠনগুলোর মাধ্যমে প্রগতিশীল সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ভালো চুক্তি পেতে সক্ষম হয়েছে।’প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্লাসগো বহরের সদস্য এবং বাংলাদেশি আলোচক কামরুল চৌধুরীর মতে, একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য নিয়েই ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো গ্লাসগোতে এসেছে।