অপরাধএক্সক্লুসিভবাংলাদেশমৌলভীবাজাররাজনীতিসিলেট

ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ভিডিও ভাইরাল

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চৈত্রঘাট বাজারে নিজ বাড়ির সামনে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।রোববার দুপুর আহত অবস্থায় ওই ব্যবসায়ীকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে সিলেটের উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাতে তার মৃত্যু হয়।নিহত ওই ব্যবসায়ীর নাম নাজমুল ইসলাম (৩৪)। তিনি চৈত্রঘাট বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন করতে চাওয়া ঐ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। নৃশংস সেই দৃশ্য আজ মঙ্গলবার বিকেল থেকে অনেকেই ফেসবুকে শেয়ার করছেন। 

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ব্যবসায়ী নাজমুল সড়কের ধার দিয়ে হেঁটে তাঁর বাসার দিকে যাচ্ছেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস এসে থামে নাজমুলের সামনে। সঙ্গে সঙ্গে মাইক্রোবাস থেকে অস্ত্র হাতে এক হামলাকারী নেমে তাঁকে ধাওয়া করেন। তিনি উল্টো দিকে ফিরে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছু দূর না যেতেই পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে মাইক্রোবাস থেকে নামা হামলাকারীরা তাঁকে ঘিরে ধরে পায়ের দিকে কোপাতে শুরু করেন। এ সময় মাইক্রোবাসটি দ্রুত মৌলভীবাজারের দিকে চলে যায়।

ভয়ে প্রথমে কেউ এসে তাকে উদ্ধার করেননি। দীর্ঘ সময় ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত অবস্থায় নাজমুল ইসলাম পড়ে ছিলেন। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।তিনি জানান, সেখান থেকে নাজমুলকে দ্রুত সিলেটের উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তার মৃত্যু হয়।এলাকাবাসী জানান, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় নাজমুল তার ওপর হামলাকারী ৪ জনের নাম উল্লেখ করেছেন।

চার থেকে পাঁচজন কোপানোয় অংশ নিলেও আশপাশ মিলে ১০ জন হামলাকারীকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়। মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে তাঁকে কুপিয়ে হামলাকারীরা ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের ওপর দিয়ে নিরাপদে চলে যান। সড়কে অচেতন হয়ে পড়ে থাকেন ব্যবসায়ী নাজমুল। আশপাশে স্থানীয় দু-একজন মানুষকে দেখা গেলেও, নাজমুলকে সাহায্য করতে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি।

পুলিশ সোমবার রাতে রাজনগর উপজেলা থেকে মামলার আসামি জুয়েল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে সোমবার ভোরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ভাড়া করা মাইক্রোবাসটি জব্দ করে ও চালক আমির হোসেনকে আটক করে হত্যা মামলায় আসামি করা হয়।

বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলে জানায়। এছাড়া হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দুটি রামদাও উদ্ধার করা হয়েছে।কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা ব্যবসায়ী নাজমুল হত্যার মামলায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার সকালে মৌলভীবাজার আদালতে প্রেরণের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

সন্ত্রাসীদের দায়ের কোপে গুরুতরভাবে আহত হয়ে সিলেটে হাসপাতালে যাওয়ার সময় মুঠোফোনে লাইভে ব্যবসায়ী নাজমুল হামলাকারী চারজনের নাম প্রকাশ করেন। তিনি লাইভে বলেছিলেন, আসন্ন ইউপি নির্বাচনে তিনি রহিমপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী ছিলেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তফজ্জুল। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিরোধের জেরে তাঁকে পরিকল্পিতভাবে  কোপানো হয়েছে।কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলায় অংশ নেওয়া অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

Back to top button