এক্সক্লুসিভগাজীপুরজীবন-যাপনবাংলাদেশ

মানসিক ভারসাম্যহীন মৌসুমীর জীবন বদলে গেল

৭ বছর আগে দিনমজুর আবদুল খালেক হঠাৎ করেই সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসলেও কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। বাধ্য হয়ে স্ত্রী নার্গিস আক্তার এক মেয়েকে নিয়ে চলে যান বাবার বাড়ি। কিন্তু বড় মেয়ে মৌসুমী আক্তারকে স্বামীর কাছেই রেখে যান। তখন  মৌসুমীর বয়স ছিল ৭- ৮বছর। মায়ের চলে যাওয়া কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি মৌসুমী। এক পর্যায়ে মেয়েটি ভারসাম্য হারিয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে চারদিকে। বাবা বাধ্য হয়ে মৌসুমীকে একটি ঘরে শিকলে বেঁধে লালন পালন করতে থাকেন। 

গাজীপুরের শ্রীপুরের গাজীপুর গ্রামের এ ঘটনা সম্প্রতি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজের নজরে আসে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি। মৌসুমীকে চিকিৎসার উদ্যোগ নেন তিনি। সংসার ছেড়ে যাওয়া নার্গিসকে ফিরিয়ে আনেন। বদলে যায় মৌসুমীর জীবন, ছন্দ ফিরে পান দরিদ্র খালেক। 

স্থানীয়রা জানান, মৌসুমীর বয়স এখন ১৪ বছর। সম্প্রতি মেীসুমীর শিকলবন্দি জীবনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয় ফেসবুকে। এরপরই মূলত তার চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসেন এমপি সবুজ।শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রণয় ভূষণ দাসের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় চিকিৎসা।

গত আগস্টের প্রথম দিকে মৌসুমীকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ  মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক  রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জুবায়ের মিয়ার তত্বাবধানে পাঠান। উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সেখান থেকে পাঠানো হয় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রণয় ভূষণ দাসের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় চিকিৎসা। গত আগস্টের প্রথম দিকে মৌসুমীকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ  মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক  রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জুবায়ের মিয়ার তত্বাবধানে পাঠান। উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সেখান থেকে পাঠানো হয় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রণয় ভূষণ দাস বলেন,  মৌসুমীর শিকলবন্দি জীবনের কথা আমার জানা ছিল না। এমপির কাছ থেকে জেনে ও তারই নির্দেশে মেয়েটিকে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করি। এখন সে অনেকটাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে।

মঙ্গলবার ছিল গাজীপুর গ্রামের আনন্দের দিন। উৎসবের দিন। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে প্রায় এক মাস চিকিৎসা নিয়ে মৌসুমী বাড়ি ফিরে এসেছে বেশ কয়েকদিন আগেই। মঙ্গলবার সন্ধ্যার ঠিক আগ মুহূর্তে মৌসুমীকে দেখার জন্য নিভৃত পল্লীর ওই বাড়িতে ছুটে যান গাজীপুর ৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ। সঙ্গে নিয়ে যান মৌসুমী ও তার মা বাবার  জন্য নতুন জামা কাপড়। দেন নগদ অর্থও। এমপির আসার খবরে জড়ো হন শত শত নারী পুরুষ ও শিশু।

এমপি সবুজ বলেন, মৌসুমীর বদলে যাওয়া জীবন, ওর মা নার্গিসের সংসার দেখার জন্যই মূলত ওই বাড়িতে। খুব আনন্দ হচ্ছে আমার একটু উদ্যোগে একটি সংসার আবার ফিরে পেল প্রাণ। মানুষ তো মানুষের জন্যই।যে ঘটনা মানুষের মনে আঘাত করে তা থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারাতে পারে। এই ভারসাম্যহীনতা হতে পারে সাময়িক, হতে পারে সারা জীবনের জন্য।  ওই মেয়টি হয়তো তার মাকে কাছে না পেলে সারা জীবনের জন্য ভারসাম্যহীন হয়েই থাকতো।

Back to top button