বিশ্ব সংবাদ

নাইজেরিয়ায় মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের এলোপাতাড়ি গুলি, নিহত ১৮

নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলের নাইজার প্রদেশের একটি মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর গুলি চালিয়ে অন্তত ১৮ জনকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। গতকাল সোমবার ফজরের নামাজের সময় এই হামলা চালানো হয়। বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ জানিয়েছে, নাইজার প্রদেশের মাসেগু এলাকার মাজাকুকা গ্রামের মসজিদে ওই হামলা চালানো হয়। ধারণা করা হচ্ছে, হামলাকারীরা ফুলানি যাযাবর পশুপালক গোষ্ঠী। হামলার পর তারা পালিয়ে যায়।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় নাইজার প্রদেশের একটি মসজিদে এই ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় দুই বাসিন্দা সোমবার (২৫ অক্টোবর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন। বন্দুকধারীরা মোটরবাইকে করে মসজিদের সামনে যায় এবং মসল্লিদেরকে গুলি করে হত্যা করে।স্থানীয় সময় সোমবার স্থানীয় মাজা-কুকা গ্রামের মাশিগু এলাকায় ভোর ৫টার দিকে হামলাকারীরা পৌঁছায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, তারা আসার পরপরই মসজিদের ভেতরে ঢোকে এবং এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানান তারা।

পানি ও ভূমির অধিকার নিয়ে এই ধরনের জাতিগত সহিংসতায় আফ্রিকায় শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এই সহিংসতার কারণে ফুলানি জনগোষ্ঠীর কেউ কেউ কৃষি কাজ করা হাউসা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে।মাসেগু স্থানীয় সরকারের চেয়ারম্যান আল হাসান আয়াম বলেন, ‘বন্দুকধারীরা মসজিদ ঘিরে ফেলে নামাজরতদের ওপর গুলি চালানো শুরু করে।’

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল গনি হাসান রয়টার্সকে জানান, বন্দুকধারীরা ঘটনাস্থলে আসার পর সোজা মসজিদের দিকে যায় এবং সরাসরি নামাজরত মুসল্লিদের দিকে গুলিবর্ষণ শুরু করে। তাদের এই গুলিবর্ষণের হাত থেকে কেউই রেহাই পায়নি। এসময় বন্দুকধারীরা ১০ জনেরও বেশি মানুষকে অপহরণ করে বলেও জানান হাসান। এছাড়া বেল্লো আয়ুবা নামে স্থানীয় আরেক বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বন্দুকধারীদের হামলায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে নাইজার প্রদেশের পুলিশের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় রয়টার্স। নাইজারের পুলিশ কমিশনার জানান, গ্রামের দুইপক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।মাজা-কুকা এলাকাটি রাজধানী থেকে ২৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সম্প্রতি প্রায়ই সেখানে হামলার ঘটনা ঘটছে।

সম্প্রতি নাইজেরিয়ার একটি কারাগারেও হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। দক্ষিণ-পশ্চিম নাইজেরিয়ার ওই কারাগারে হামলা চালিয়ে বহু বন্দিকে মুক্ত করে নিয়ে যায় তারা।এছাড়াও এক সপ্তাহ আগে উত্তরাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে হামলা চালিয়ে অন্তত ৪০ জনকে হত্যার ঘটনা ঘটে।

নাইজারের পুলিশ কমিশনার মানডে কুরিয়াস বলেছেন, এই হামলার সঙ্গে গ্রামবাসী ও ফুলানি পশুপালকদের বিরোধের সম্পর্ক রয়েছে। নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্যাঞ্চলে নিরাপত্তা সমস্যার সর্বশেষ উদাহরণ এই হামলা। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রাণঘাতী সহিংসতা বিশেষভাবে বেড়েছে।

Back to top button