ভয়ঙ্কর সব অপরাধে জড়াচ্ছে মানবতার খাতিরে বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গারা। ক্যাম্পগুলোতে প্রতিদিন কোনো না কোনো অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। হত্যাকাণ্ড, ছিনতাই, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, ইয়াবা ব্যবসা, বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ও অনিয়মতান্ত্রিক কাজে রোহিঙ্গাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে। এদের নিয়ন্ত্রণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হিমশিম খাচ্ছে।
স্থানীয় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির নেতা সিনিয়র সাংবাদিক নুর মুহাম্মদ সিকদার জানান, ক্যাম্প থেকে লোকালয়ে যত্রতত্র রোহিঙ্গাদের আবার বিচরণের ফলে দিনদিন অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা হুমকির মধ্যে রয়েছে।
একইদিন দুটি পৃথক অভিযান চালিয়ে ক্যাম্প-১৮ থেকে আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. হাশিম (৩৮) ও আরসা সন্দেহে মাঝি মো. ফরিদ হোসেনকে (৩৫) আটক করে এপিবিএন। আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।গত রোববার কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডি/২ ব্লকে অভিযান চালিয়ে আরসার জিম্মাদার রোহিঙ্গা মো. কেফায়েত উল্লাহকে (৩৫) আটক করা হয়েছে।উখিয়ার ১০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এফ/১৮ ব্লকে অভিযান চালিয়ে আরসার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে রোহিঙ্গা মো. শফিউল্লাহকে (৩০) আটক করা হয়।
গত শনিবার উখিয়া উপজেলার ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরীক্ষণে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে তিনজনের একটি পরিবার আব্দুল আমিন তার স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তপথ ব্যবহার করে তার বাবা মায়ের কাছে ডি/২ ব্লকে এসেছে।এছাড়া গত বুধবার উখিয়া উপজেলার কোটবাজার এলাকা থেকে ফাতেমা আক্তার রুমি (১৫) নামে একটি মেয়েকে স্কুল থেকে বাড়ি আসার পথে বালুখালী ১০ নম্বর ক্যাম্পের জি-১৫ ব্লকের রোহিঙ্গা যুবক মো. রিদুয়ানসহ (২২) আরো অজ্ঞাত তিনজন মিলে সিএনজিতে তুলে অপহরণ করে বলে জানা যায়।
অপহরণকারী রোহিঙ্গা যুবকটি ভিকটিমের বাড়ির পার্শ্বে শমশের আলমের মুরগির ফার্মে কাজ করতো এবং অপহরণের পর ভিকটিমের বাবার কাছে বিভিন্ন মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে কল দিয়ে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে তার মেয়েকে নষ্ট করে দেবে বলে হুমকি দেয়। এ বিষয়ে মেয়েটির বাবা উখিয়া থানায় অভিযোগ করেছে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহাম্মদ সঞ্জুর মোর্শেদ জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিশাল জনগোষ্ঠীর অবস্থান, তাই ঘাপটি মেরে থাকা অপরাধীচক্র ক্যাম্পগুলোতে সবসময় সক্রিয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চেষ্টা করে যাচ্ছে এসব অপরাধীদের চিহ্নিত পূর্বক আইনের আওতায় নিয়ে আসার।
১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক নাঈমুল হক জানান, সুযোগ সন্ধানী দুষ্কৃতিকারী চক্র ক্যাম্পগুলোতে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা করে প্রত্যাবাসনে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে চায়। আমরা এসব দুষ্কৃতিকারীদের চিহ্নিত করার কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিদিনই কোনো না কোনো দুষ্কৃতিকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হচ্ছে।