নতুন নামের পরিকল্পনা করছে ফেসবুক
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ইনকরপোরেশন তাদের নাম পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে। এই পরিবর্তন আসতে পারে আগামী সপ্তাহে। মেটাভার্স কোম্পানি হিসেবে নিজেদের পুনর্গঠিত করতেই এই উদ্যোগ। ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে দ্য ভার্জ।
ফেসবুক নামটির সঙ্গে আজ আট থেকে আশি সকলেই পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে মার্ক জুকেরবার্গের এই কোম্পানিটি। ফেসবুক ইনকরপোরেশন তাদের নাম পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে।২৮ অক্টোবর ফেসবুকের কর্মীদের নিয়ে ‘কানেক্ট’ নামের একটি বার্ষিক সম্মেলন হওয়ার কথা। সেখানেই ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জুকেরবার্গ নাম পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।প্রতিবছর ফেসবুকের কর্মীদের নিয়ে ‘কানেক্ট’ নামের একটি সম্মেলন হয়।
মেটাভার্স বলতে বোঝায় একটি ভার্চ্যুয়াল জগৎ। ইন্টারনেটের মাধ্যমেই মানুষ এ জগতের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন। এ জগৎ বাস্তবতার সঙ্গে ডিজিটাল সংমিশ্রণ। ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি অথবা অগমেন্টেড রিয়েলিটির মাধ্যমে গড়ে ওঠার কারণে এই জগতে ব্যবহারকারীদের নিজেকে আরও জীবন্ত মনে হবে।
জুলাইয়ে , ‘দ্য ভার্জকে’ একটি সাক্ষাৎকার দেবার সময় মার্ক বলেছিলেন যে, ‘পরবর্তী কয়েক বছর ধরে আমরা কার্যকরভাবে আমাদেরকে একটি সামাজিক মিডিয়া কোম্পানি থেকে একটি মেটাভার্স কোম্পানি হিসেবে উন্নীত করবো , যার সুফল মানুষ পাবে ।”এই রিব্রান্ডিং কোম্পানির সুরক্ষা বলয়কে আরো মজবুত করতে সাহায্য করবে।
এই রিব্র্যান্ড করার সিদ্ধান্ত সম্ভবত নীল ফেসবুক অ্যাপটিকে ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ওকুলাস এবং আরও অনেক কিছুর মতো তত্ত্বাবধানকারী মূল কোম্পানির অধীনে বিশেষ স্থান করে দেবে ।ইতিমধ্যেই ফেসবুকের ১০,০০০ এরও বেশি কর্মচারী এআর চশমার মতো একটি হার্ডওয়্যার তৈরি করছে যা শেষ পর্যন্ত স্মার্টফোনের মতো সর্বব্যাপী হবে বলে বিশ্বাস জুকেরবার্গের ।
এই নাম পরিবর্তনের দৌড়ে ফেসবুক একা নয় , এর আগেও ২০১৫ সালে গুগল সম্পূর্ণরূপে অ্যালফাবেট নামক একটি হোল্ডিং কোম্পানির অধীনে পুনর্গঠিত হয়েছে, আংশিকভাবে এই ইঙ্গিত দেওয়ার জন্য যে এটি আর কেবল একটি সার্চ ইঞ্জিন নয়। ২০১৬ তে স্ন্যাপচ্যাট- এর রিব্রান্ডিং করা হয়, এই বছরই এটি নিজেকে একটি “ক্যামেরা কোম্পানি” বলা শুরু করে এবং তার প্রথম ক্যামেরা চশমা আত্মপ্রকাশ করে। ফেসবুকের নতুন নাম কি হতে চলেছে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা দানা বেঁধেছে।
মাত্র কয়েকদিন আগে ফেসবুক ইউরোপে মেটাভার্সে কাজ করার জন্য আরও ১০,০০০ কর্মচারী নিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।মেটাভার্স শব্দটি প্রথম কল্প বিজ্ঞান গল্পের লেখক স্টিফেনসন দ্বারা ব্যবহৃত হয়েছিল একটি ভার্চুয়াল জগতকে বর্ণনা করার জন্য। এখন সেই কল্প বিজ্ঞানের দুনিয়াকেই বাস্তবের মাটিতে আনার চেষ্টা করছেন মার্ক জুকারবার্গ।
কোম্পানির অনেক বড় কর্মকর্তারাই এখনো বিষয়টি সম্পর্কে পুরোপুরি জানেন না। তবে এমন কিছু ভাবা হচ্ছে যা হরাইজোনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। ফেসবুক হরাইজন ওয়ার্করুমস নামে কর্মক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য একটি সংস্করণের ডেমো তৈরী করার কিছুক্ষণ পরেই সেই অ্যাপের নামটি হরাইজন ওয়ার্ল্ডস -এ পরিবর্তন করা হয়েছিল। ফেসবুক পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তির উপর আগ্রহ বাড়াতে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে চলেছে ।