পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি স্বল্পতা, ঘাটের বেসিনে নাব্য সংকটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে ঘাট এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাটুরিয়া-ঢাকা মহাসড়কের আরপাড়া পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট ছিল। পারাপারের অপেক্ষায় ছিল প্রায় ৮০০ ট্রাক। ফেরি পার হতে না পেরে দিনের পর দিন যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে পণ্যবাহী এসব ট্রাককে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারে (৮ অক্টোবর) মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়াঘাটে গাড়ির চাপ কিছুটা বেড়েছে। এই নৌ-রুটে ৫টি মাঝারি আকৃতির ফেরি চলাচল করছে। সেগুলো গাড়ির চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন বিআইডাব্লিউটিসির শিমুলিয়াঘাটের ব্যবস্থাপক সাফায়েত আহম্মেদ।
জানা গেছে, এ নৌরুটে চলাচল করা ১৮টি ফেরির মধ্যে তিনটি বিকল হয়ে মেরামতের জন্য পাটুরিয়া ভাসমান কারখানায় পড়ে আছে। ফলে ১৫টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারপার করা হচ্ছে। ফেরি স্বল্পতা, নদীতে দ্রুত পানি কমে যাওয়ায় ঘাটের বেসিনে নাব্য সংকট এবং ঘাট এলাকায় যানবাহন বেড়ে যাওয়ায় এ ভোগান্তি হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) কর্তৃপক্ষ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী বাস ও কোচ পারাপার করছে। এতে পণ্যবাহী ট্রাকচালকদের ৩-৪ দিন করে ঘাটেই পড়ে থাকতে হচ্ছে।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে শিমুলিয়ায় দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলগামী গাড়ির চাপও বাড়তে থাকে। দুপুরে শিমুলিয়াঘাটে কয়েকশ’ যানবাহন পারের অপেক্ষায় ছিল। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় অনেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে ঘাটে এসে ভিড় করছে। এজন্য শিমুলিয়াঘাটের পরিস্থিতি এমন। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে ৫টি মিডিয়াম ফেরি চলছে। এগুলো গাড়ির চাপ সামাল দিতে পারছে না। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির চাপও বেড়েছে। গাড়ির লাইন দীর্ঘ হচ্ছে।
চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা বরিশালগামী ট্রাকচালক দবির হোসেন জানান, তিনি বুধবার বিকেল ৫টার দিকে পাটুরিয়া ঘাটে আসেন। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ফেরির টিকিট পাননি।ঢাকার সাভার থেকে ছেড়ে আসা যশোরগামী ট্রাকচালক মজিদ শেখ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে পাটুরিয়া ঘাটে আসেন। তিনি শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত টিকিট পাননি।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান জানান, এ নৌরুটে চলাচলরত বেশিরভাগ ফেরি দীর্ঘদিনের পুরোনো। ক’দিন পরপরই সেগুলো বিকল হচ্ছে। এতে ফেরি স্বল্পতা দেখা দিচ্ছে। যার কারণে পারাপারে সমস্যা হচ্ছে।ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী বাস ও কোচ পারাপার করা হচ্ছে। এ কারণে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ট্রাকচালকদের।
৫টি ফেরি দিয়ে গাড়ির চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দিন দিন পদ্মায় স্রোত কমতে শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নৌপথ সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ফেরির সংখ্যা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বাড়তে পারে। যেসব মাঝারী আকৃতির ফেরি গুলো চলছে তাতে ২৫-৩০টি গাড়ি পার হতে পারছে।