রাজধানী ঢাকায় একসঙ্গে কলেজ পড়ুয়া ৩ ছাত্রী নিখোঁজ হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা মিরপুর–১৪ এলাকার বাসিন্দা। এ বিষয়ে রাজধানীর পল্লবী থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে। পল্লবী এলাকা থেকেই তারা নিখোঁজ হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বাসা থেকে বের হয়ে তারা নিখোঁজ হয়।
তিন বান্ধবী বাসা থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, স্কুল সার্টিফিকেট ও দামী মোবাইল ফোন নিয়ে হঠাৎ উধাও হয়ে গেছেন। নিখোঁজরা হলেন মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউটের ছাত্রী কাজী দিলখুশ জান্নাত নিসা, দুয়ারিপাড়া কলেজের শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা ও পল্লবী ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী স্নেহা আক্তার। তারা দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
নিখোঁজ ৩ ছাত্রীর একজনের মা এ ঘটনায় আজ শুক্রবার পল্লবী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, গতকাল, ৩০ সেপ্টেম্বর, একই সময়ে তারা তিন বান্ধবী নিখোঁজ হয়। তার, অভিযোগকারিনী, মেয়ে বাসা থেকে ৬ লাখ টাকা, স্বর্ণালংকার এবং মুঠোফোন নিয়ে গেছে। এ ছাড়া অপর দুইজনের একজন আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার এবং অপরজন ৭৫ হাজার টাকা নিয়ে গেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কলেজের পোশাক পড়ে বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন তারা। তিন শিক্ষার্থীর স্বজনদের অভিযোগ, বিদেশে নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নারী পাচারকারী চক্রের সদস্যরা ওই তিন বান্ধবীকে তুলে নিয়ে গেছে।
এ ঘটনায় নিখোঁজ নিসার মা মাহমুদা আক্তার টিকটকের পরিচিত মুখ জিনিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আজ শুক্রবার পল্লবী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত অন্য দুজন হলেন সহোদর তরিকুল ও রকিবুল। পুলিশ দুই ভাইকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
অভিযোগে মাহমুদা জানান, তার মেয়ে নিসা ও তার দুই বান্ধবী কানিজ ফাতেমা ও স্নেহাকে বিদেশে নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘরছাড়া করেছে একটি নারী পাচারকারী চক্র। তাদের প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়ে ৩জন পরিবারের কাউকে কিছু না বলে গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে নিজ নিজ বাসা থেকে একযোগে বের হয়। এসময় সবাই বাসা থেকে কয়েক লাখ টাকা, গহনা, স্কুল সার্টিফিকেট ও দামি মোবাইল নিয়ে গেছে।
জান্নাতের বড় বোন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী কাজী রওশন দিল আফরোজ জানান, জান্নাত ও তার বান্ধীদের বিদেশে নেওয়ার প্রলোভন দেখানোর কারণে তারা পরিকল্পনা করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তিনজনই কলেজের পোশাক পরে, কাঁধে কলেজের ব্যাগ ঝুলিয়ে বের হয়েছেন। তাদের উধাও হওয়ার পেছনে প্রতিবেশী তরিকুল, রকিবুল ও জিনিয়ার হাত রয়েছে।
‘ঘটনার পর আমরা তরিকুলের বাসায় গিয়ে জানতে পারি, তরিকুল ও তার বড় ভাই রকিবুল বৃহষ্পতিবার থেকে বাসায় নেই। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাচ্ছে তাদের স্বজনরা। আমাদের বদ্ধমূল ধারণা তরিকুল ও জিনিয়ার পরিবার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারা জানে আমার বোন ও তার বান্ধবীরা কোথায় আছে’, বলেন তিনি।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সজিব খান শুক্রবার রাতে বলেন, নিখোঁজ এক শিক্ষার্থীর মা ঘটনার বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত তরিকুল ও রকিবুলকে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরেক অভিযুক্ত জিনিয়া বর্তমানে ফরিদপুরে রয়েছেন। তাকে থানায় আসতে বলা হয়েছে।পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম জানান, একসঙ্গে ৩ শিক্ষার্থী নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে তদন্ত চলছে। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।