নাটোরে চাঁদা না পেয়ে দোকান কর্মচারীর হাতের আঙ্গুলের নখ উপড়ে নিয়েছেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় সংগঠন দুটির আট নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই দোকানের মালিক আব্দুস সালাম। মধ্যযুগীয় কায়দায় প্লায়ার্স দিয়ে ১৫ বছর বয়সী ফয়সাল হোসেন নামে এক দোকান কর্মচারীর আঙ্গুলের নখ উপড়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল রোববার সকালে নাটোর সদর থানায় মামলা করা হয়। আসামিরা হলেন- নাটোর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রনি আহমেদ, তাঁর ভাই যুবলীগ সদস্য রবিউল আওয়াল বাপ্পি, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ হিল কাফী শুভসহ ৮ জন।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত ২ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- নাটোর সদর উপজেলার নবীনগর গ্রামের ইসাহাক আলীর ছেলে একরাম হোসেন ওরফে সুমন (৩৫) এবং শহরের চকরামপুর আনিসুর রহমানের ছেলে মো. আবির (২৬)।এ সময় পুলিশ দোকান মালিকের ছিনিয়ে নেওয়া একটি আরওয়ান ফাইভ মডেলের মোটরসাইকেল উদ্ধার করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে একরাম হোসেন সুমন ও আব্দুস সালামের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জেরে গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের স্টেশন বাজার এলাকা থেকে ব্যবসায়ী সালাম ও তাঁর দোকানের কর্মচারী ফয়সাল হোসেনকে (১৫) মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যান রবিউল আওয়াল বাপ্পি ও মোহাম্মদ মনি। তাঁদের সহযোগিতা করেন মো. আবির এবং সুমন।
‘সেখানে নেওয়ার পর দোকান কর্মচারী ফয়সালকে চোর বলে দাবি করে আমার কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তারা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে সালামের সামনে রবিউল আওয়াল বাপ্পি এবং তার সহযোগীরা লোহার প্লায়ার্স দিয়ে ফয়সালের বাম হাতের তর্জনী আঙ্গুলের নখ উপড়ে ফেলে।’
ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম মামলার অভিযোগে বলেন, তাঁর ব্যবহৃত আরওয়ান ফাইভ মডেলের মোটরসাইকেলটি এ সময় আসামিদের দিয়ে দিলেও তাঁরা আরও দুই লাখ টাকা দাবি করেন। এ ঘটনা পুলিশকে জানালে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। টাকা জোগাড় করতে না পেরে বাধ্য হয়ে নাটোর থানা পুলিশকে মৌখিকভাবে জানান তিনি।
নাটোর জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লবের কাছে এ বিষয়ে চাইলে তিনি রনি আহমেদ, রবিউল আওয়াল বাপ্পি ও আব্দুল্লাহ হিল শুভর দলীয় পদ নিশ্চিত করে বলেন, ‘এটি একটি নৃশংস ঘটনা। যারাই এর সঙ্গে জড়িত আছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
এ বিষয়ে নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনসুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামি একরাম হোসেন সুমনকে গ্রেপ্তার করে এবং ভুক্তভোগী ফয়সালকে ও আব্দুস সালামের মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। আহত ফয়সালকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’