বিদ্রোহীদের ওপর মিয়ানমার সামরিক জান্তার বিমান হামলা
সাগাইং অঞ্চলে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের ওপর বিমান হামলা চালিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেখানকার বেশিরভাগ এলাকায় বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন সংযোগ। স্থানীয় মিডিয়া ও বিদ্রোহীদের এক সদস্যকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চি সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমারে ক্ষমতায় আসে দেশটির সামরিক বাহিনী। এরপর দেশব্যাপী বিক্ষোভ করেন সু চি সমর্থকরা। এ সময় গুলিতে কয়েকশ’ সু চি সমর্থক নিহত হন।
সামরিক জান্তা সরকার ক্ষমতায় আসার পর মিয়ানমারের বিভিন্ন অংশে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠিগুলো আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে ওঠে। তাদের ঠেকাতে বিভিন্ন জেলায় অব্যহতভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
এ রকমই একটি সংগঠন পিডিএফ, যারা জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। দিল্লিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়, পিডিএফের এক সদস্য নিশ্চিত করেছেন যে, বিমান হামলা হয়েছে। তবে সংগঠনটির কেউ হতাহত হননি।এ নিয়ে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার কোনো মন্তব্য করেনি।
স্থানীয় অধিবাসীরা বলেছেন, তারা বিমান থেকে হামলা ও বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন শনিবার রাতভর। এর আগে ফোন লাইন এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। পিনলেবুর পিডিএফের এক সদস্য ওই এলাকার বাইরে থেকে টেলিফোনে এ খবর নিশ্চিত করেছেন। বলেছেন, বিমান থেকে হামলা চালানো হয়েছে। তবে এতে তার গ্রুপের কোনো সদস্য হতাহত হননি বলে তিনি দাবি করেন।
ওদিকে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আইনপ্রণেতারা ও অন্য বিরোধীদের সমন্বয়ে মিয়ানমারে যে ছায়া প্রশাসন বা ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) গঠন করা হয়েছে, তারা বলেছে- এই লড়াইয়ে বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে একটি রকেটচালিত গ্রেনেড, ছোটখাট অস্ত্র, গোলাবারুদ। তাদের দাবি, এই লড়াইয়ে সরকারের কমপক্ষে ২৫ সেনা সদস্য নিহত হয়েছে।
সম্প্রতি সাগাইংসহ মিয়ানমারের কয়েকটি এলাকায় জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বেড়েছে। এসব এলাকায় অভিযান চালানোর আগে সামরিক বাহিনী ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়।বৃহস্পতিবার সামরিক বাহিনী মিয়ামারের চিন প্রদেশ ও মাগওয়া অঞ্চলের সংঘাতপূর্ণ ১১টি এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।গত সপ্তাহে সংঘাতের জেরে ভারতের সীমান্ত লাগোয়া চিন প্রদেশের থানল্যাং শহর ছেড়ে পালিয়ে যান হাজার হাজার মানুষ। সে সময়ে সংঘাতে একজন খ্রিস্টান যাজকও নিহত হন।
গত ৭ই সেপ্টেম্বর এনইউজি জনগণকে জেগে ওঠার আহ্বান জানানোর পর সাগাইং এলাকার মতো অনেক এলাকায় রক্ত ঝরছে। ওই ঘোষণায় তারা সামরিক জান্তা ও তার সম্পদের ওপর টার্গেট করতে পিডিএফের প্রতি আহ্বান জানায়।
সেনাবাহিনীর আংশিক মালিকানাধীন কোম্পানি মাইটেল-এর টাওয়ার বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার দায় স্বীকার করেছে কিছু বিদ্রোহী গ্রুপ। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান ফ্রিডম হাউজ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে ইন্টারনেট স্বাধীনতা অবনমন হয়েছে ১৪ পয়েন্ট।