টানা তৃতীয়বারের মতো কানাডার প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন জাস্টিন ট্রুডো। দেশটির ৪৪তম সাধারণ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত স্পষ্টত এগিয়ে রয়েছেন জাস্টিন ট্রুডোর নেতৃত্বাধীন লিবারেল পার্টি। খবর গার্ডিয়ানের।
জয়ের খবরের পর মন্ট্রিলে বক্তৃতা করেন জাস্টিন ট্রুডো। তিনি এটিকে ‘ক্লিয়ার ম্যান্ডেট’ বা স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা বলে উল্লেখ করেন। এসময় তিনি সমর্থক, বিরোধী দলীয় নেতা ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে প্রাথমিক গণনায় দেখা গেছে ৩৩৮ আসনের হাউস অব কমনসে ট্রুডোর লিবারেল পার্টি ১৫৭টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। বিপরীতে তার প্রতিপক্ষ কনসারভেটিভ পার্টির প্রার্থী পেয়েছেন ১২২টি আসন। দলটির দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ইতিমধ্যে পরাজয় মেনে নিয়েছেন।
বাদ বাকি ৫৯ আসনের মধ্যে, ব্লক কুইবেকোয়া পেয়েছে ৩১টি ও বামপন্থি নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) পেয়েছে ২৬টি আসন। আর এখনো দুইটি আসনের ভোট গণনা শেষ হয়নি। কিন্তু দেশটিতে এককভাবে ১৭০ আসন না পেলে কোন দল সরকার গঠন করতে পারে না। ফলে, অন্যকোন দলের সঙ্গে জোট গঠন করে ক্ষমতায় যেতে হবে ট্রুডোর দলকে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রুডো তার সমর্থকদের বলেছেন, সব কানাডিয়ানের মঙ্গলের জন্যে অন্য দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করা হবে। হোটেলের বলরুমে সমবেত সমর্থকদের তিনি বলেন, ‘এই মহামারির মধ্যে আমাদের নির্বাচিত করে আবার সুন্দর ভবিষ্যতের জন্যে কাজ করার সুযোগ দিচ্ছেন। আজ আমরা যা দেখলাম তা হলো লাখো কানাডিয়ান প্রগতিশীল পরিকল্পনার প্রতি রায় দিয়েছেন।’
দেশটির পার্লামেন্টে মোট আসন ৩৩৮টি। ভোটার রয়েছেন দুই কোটি ৭০ লাখ। স্থানীয় সময় সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টা ৩০ মিনিটে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। এরপর গণনা শুরু হয়।করোনার কারণে এবার ডাকযোগে অর্থাৎ মেইল ভোট দিয়েছেন বেশি। ফলে ভোট গণনায় সময় লাগছে। এজন্য পূর্ণাঙ্গ ফল আসতেও কিছুটা দেরি হতে পারে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিবিসি’র সমীক্ষায় বলা হয়েছিল হাউস অব কমনসে সরকার গড়তে ট্রুডোর লিবারেল পার্টিকে অন্য দলের সমর্থন নিতে হতে পারে। সিবিসি জানায়, ট্রুডো তার মন্ট্রিয়েল আসন থেকে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি ভোটারদের বলেছিলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জন্যে সঠিক পথটি বেছে নেওয়া হবে। আমরা যেন সামনে এগিয়ে যেতে পারি।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মহামারিতে কেন নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে তা ভোটারদের বোঝাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে ২০১৫ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা ট্রুডোকে। গত ২০১৯ সালে নির্বাচনে ১৫৭টি আসন জিতে অন্য বিরোধীদের সমর্থন নিয়ে ট্রুডোর লিবারেল পার্টি ক্ষমতায় আসে।
ট্রুডোর লিবারেল পার্টির ক্ষমতায় ফেরার সংবাদে আজ মার্কিন ডলারের বিপরীতে কানাডিয়ান ডলার দাম বেড়েছে। তার এই বিজয় দেশটিতে বিনিয়োগকারীদের আর্থিক সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারির মধ্যে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় দুই বছর আগেই আগাম নির্বাচন দিয়েছেন ট্রুডো।২০১৫ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৮৪টি আসনে জয়লাভ করে ট্রুডোর নেতৃত্বাধীন লিবারেল পার্টি। দলের প্রধান হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন।