সোহেল রানা ঢাকার চারটি অভিজাত আবাসনে চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের মালিক। এছাড়াও ৯ কোটি টাকা মূল্যের একটি কমার্শিয়াল বিল্ডিংয়ের মালিক সে। আছে প্রচুর জমিজমা, চারটি দেশে সম্পত্তি ও তিনটি ব্যবসার মালিক সোহেল রানা। বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির ডিলারশিপও আছে সোহেল রানার নামে। নিকেতন দুই-এ তার সম্পত্তি আছে। টি অ্যান্ড জি নামে কোম্পানি চালাত সোহেল গুলশান এবং উত্তরার গরিব নেওয়াজ এভিনিউ থেকে। এছাড়াও পূর্বাচলে প্লট, কুড়িল বিশ্বরোডের ই ও আই ব্লকে জমি, খাগড়াছড়িতে রিসোর্ট। একজন পুলিশ অফিসার এত সম্পত্তির মালিক কীভাবে হতে পারে তা নিয়ে চক্ষু চড়কগাছ ওপার বাংলার পুলিশের।
এছাড়াও হিউম্যান ট্রাফিকিংয়ের অভিযোগ আছে সোহেল রানার বিরুদ্ধে। আটশো ইউরোর বিনিময়ে ইউরোপে মানবপাচার নাকি সে করতো। সোহেল রানা নিজে এখন বাংলাদেশে ফিরতে নারাজ। সে ভারতের জেলে পচে মরতেও রাজি বাংলাদেশে বিচারের মুখে পড়ার থেকে।
১১০০ কোটি টাকা অর্থনৈতিক প্রতারণার কিং পিন ঢাকার বনানী থানার ইন্সপেক্টর ইনভেস্টিগেশন সোহেল রানাকে ফিরে পেতে মরিয়া বাংলাদেশ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে নিয়মিত দরবার করছে বাংলাদেশ সোহেল রানাকে তাদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য। কিন্তু ভারতীয় আইন অনুযায়ী অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য সোহেল রানার বিরুদ্ধে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ আদালতে যে মামলা রুজু হয়েছে তার নিস্পত্তি হওয়ার আগে তাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলামও মনে করেন যে, সোহেল রানার ভারতে বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে বাংলাদেশের তাকে হাতে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্তে সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করা হয় ভারতে বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশ করার জন্য। তাকে তিনদিনের পুলিশ রিমান্ড এবং তারপর ১৩ দিনের জেল হেফাজত দেয়া হয়। একজন সাধারণ অনুপ্রবেশকারীর যে ধারায় সাজা হয়, সোহেল রানারও সেই ধারায় সাজা হবে বলে জানিয়েছেন কোচবিহারের এক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার।
বাংলাদেশের একটি প্রভাবশালী মহলও চেষ্টা চালাচ্ছে সোহেল রানা যাতে বাংলাদেশে ফিরতে না পারে। কারণ, তাহলে এই কীর্তিমানদের অনেক কীর্তি ফাঁস হয়ে যাবে। বাংলাদেশের পররাস্ট্র মন্ত্রনালয় অবশ্য নাছোড়বান্দা একদা ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি ডিভিশনের এই এসআই বর্তমানের বনানী থানার ইন্সপেক্টর ইনভেস্টিগেশনকে নিজেদের হাতে নিতে।