‘লাল তালিকা’ থেকে বাংলাদেশের নাম প্রত্যাহার
যুক্তরাজ্য সরকারের ভ্রমণ লাল তালিকা থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর ভোররাত চারটায় এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।যুক্তরাজ্যের পরিবহনসচিব গ্রান্ট শাপস গতকাল শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সরলীকৃত আন্তর্জাতিক ভ্রমণব্যবস্থার অংশ হিসেবে এ ঘোষণা দিয়েছেন। আজ শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে ভ্রমণের ক্ষেত্রে জটিলতা অবশেষে কাটছে।যুক্তরাজ্য পরিবহনমন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস লাল তালিকা থেকে বাংলাদেশসহ আটটি দেশকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান। অন্য সাতটি দেশ হলো শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, তুরস্ক, কেনিয়া, মিসর ও ওমান। দেশগুলোর কভিড পরিস্থিতির উন্নতি আমলে নিয়েই লাল তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্রমাগত ও কার্যকর কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে এ ইতিবাচক ফলাফল এসেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সফরকালে এবং যুক্তরাজ্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশকে যুক্তরাজ্যের ‘লাল তালিকা’ থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। দেশে ফিরে তিনি বলেছিলেন, কভিড পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পরও বাংলাদেশকে ওই তালিকায় রাখা বৈষম্যমূলক।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার আশা প্রকাশ করে বলেন, ৪ অক্টোবর ব্রিটেনের ভ্রমণব্যবস্থার ভবিষ্যৎ পর্যালোচনায় বাংলাদেশকে সবুজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে ভ্রমণকারীদের ১০ দিনের হোটেল কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজন হবে না। তবে তাঁদের যুক্তরাজ্য অনুমোদিত দুই ডোজ করোনার টিকা দেওয়া থাকতে হবে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর দ্বিতীয় দিন বা এর আগে একটি কোভিড-১৯ প্রি-ডিপার্চার পরীক্ষা এবং একটি কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাতে হবে।
যাঁদের যুক্তরাজ্যের অনুমোদিত টিকার পূর্ণ ডোজ দেওয়া হয়নি, তাঁদের অবশ্যই বাড়িতে বা যেখানে তাঁরা অবস্থান করছেন, সেখানে ১০ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিন করতে হবে। অবশ্যই যুক্তরাজ্যে গিয়ে প্রথম দিন দ্বিতীয় দিন এবং অষ্টম দিন কোভিড পরীক্ষা করতে হবে। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যমতে তাদের অনুমোদিত করোনার টিকাগুলো হলো মডার্না, অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার–বায়োএনটেক ও জনসন।
কভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নির্দিষ্ট সময় পর পর যুক্তরাজ্য সরকার ট্রাফিক বাতির মতো রং যেমন ‘রেড’, ‘আম্বার’ ও ‘গ্রিন’ তালিকার মাধ্যমে ঝুঁকি নিরূপণ করে। গত ৭ মে যুক্তরাজ্য সরকার প্রকাশিত তালিকায় বাংলাদেশ ‘রেড লিস্টে’ স্থান পায়। এর ফলে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে যাওয়া নিষিদ্ধ না হলেও নির্ধারিত হোটেলে কোয়ারেন্টিনের বাধ্যবাধকতার কারণে তা ছিল বেশ ব্যয়বহুল।
জানা গেছে, কোয়ারেন্টিনে বেশি খরচের কারণে অনেক ব্রিটিশ বাংলাদেশি প্রয়োজন সত্ত্বেও যুক্তরাজ্যে ফিরে যাননি। আবার অনেকের বাংলাদেশে আসার প্রয়োজন পড়লেও ফেরার সময় বড় অঙ্কের কোয়ারেন্টিন খরচের কারণে দেশে আসেননি। লাল তালিকা থেকে বাদ পড়ার ফলে এখন তাদের ভ্রমণ অনেক স্বাচ্ছন্দ্যের হবে।