আওয়ামী লীগবাংলাদেশরাজনীতি

আওয়ামী লীগ নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করছে

গত ৯ই সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে আগামী নির্বাচন নিয়ে দলীয় নেতাদের নানা নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। এজন্য তাদেরকে নিজেদের মধ্যকার বিরোধ মিটিয়ে নেয়ার কথা বলেন। আর যারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে বিরোধ-বিবাদে জড়াবেন তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

যেসব জেলায় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি আছে সেইসব জেলায় অবিলম্বে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি গঠন করার নির্দেশনা দেয়া হয় বৈঠক থেকে।দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশের পর নড়েচড়ে বসেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। দলীয় প্রধান সংশ্লিষ্ট নেতাদের নির্বাচনী রোডম্যাপ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচনের দুই বছরেরও কম সময় থাকায় এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়কে প্রাধান্য দিচ্ছেন নেতারা।

অনেকগুলো বিষয় সামনে রেখে দলীয় নেতারা সিদ্ধান্ত তৈরি করছেন। কমিটি, দলীয় কোন্দল, এলাকায় আধিপত্য, এমপিদের সঙ্গে নেতাদের বিরোধ, মন্ত্রীদের সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের মতবিরোধ, পকেট কমিটি, অনুপ্রবেশ, যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সদস্যদের দলে স্থান, ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলে দলকে ব্যবহার, দলের মধ্যে থেকে দ্বৈত ভূমিকা ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে আগামী ছয় মাস কাজ করবে আওয়ামী লীগ।

আগামী নির্বাচনে জোটের বিষয়টিকে এখন থেকেই গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। দলের নির্বাচিত কয়েক নেতা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। নীরব দায়িত্ব পেয়ে ওইসব নেতা আপাতত ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলাপ-আলোচনায় ব্যস্ত। জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের ছক কষছেন তারা। শিগগিরই এসব বিষয় সামনে চলে আসবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।

গত নির্বাচনের আগে যেভাবে বিভাগওয়ারী কেন্দ্রীয় নেতারা সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন এবারো একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। তারা বলেন, করোনার কারণে আমরা সাংগঠনিক কার্যক্রম খুবই সীমিত আকারে পরিচালনা করেছি। এবার বৃহৎ পরিসরে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের অভ্যন্তরীণ বিবাদকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনী রোডম্যাপে আসনভিত্তিক কোন্দল মেটানোকে প্রাধ্যান্য দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।তারা জানান, প্রায় এক বছর ধরে দলের কেন্দ্র থেকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয় তৃণমূলে। দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠিও দেয়া হয়। তাতে স্পষ্ট করে বলা হয়, দলের মধ্যে কেউ যেন বিদ্রোহ না করে। এসব নির্দেশনায় খুব একটা কাজ হয়নি।

নির্বাচনী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব-অপপ্রচার রোধে এক লাখ অনলাইন এক্টিভিস্ট-এর সমন্বয়ে একটি প্ল্যাটফরম তৈরির কাজ করছে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি। এ লক্ষ্যে সারা দেশে অনলাইন এক্টিভিস্টদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করছে দলের এ উপ-কমিটি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব-অপপ্রচার ছড়িয়ে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করবে। যেহেতু তারা রাজপথে পেরে উঠতে পারবে না, তাই তাদের একমাত্র হাতিয়ার হচ্ছে গুজব ও অপপ্রচার। আমাদেরকে আগামী দিনে এই গুজব-অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো জেলা পর্যায়ে ১০ হাজার মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করা। আর এই মাস্টার ট্রেইনারদের দ্বারা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত এক লাখ অনলাইন এক্টিভিস্ট তৈরি করা।

প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী যেন আগামী দিনে কোনো প্রকার গুজব-অপপ্রচারের মাধ্যমে আমাদের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত না করতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করবে এই অনলাইন এক্টিভিস্টরা।

Back to top button