নেত্রকোণার দুর্গাপুরে ঘর থেকে তুলে নিয়ে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বোন জামাইয়ের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে পুলিশ কিশোরীকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার বিকেলে শিক্ষার্থীর ভাই বাদী হয়ে খালাতো বোন জামাই মুলহাস মিয়াকে (৩৫) আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন।
এর আগে শনিবার রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কোনাফান্দা গ্রাম থেকে আহত অবস্থায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। পরে রবিবার পরীক্ষার জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে দুর্গাপুর থানা পুলিশ।
ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়- গতকাল রোববার রাতে আসামি মুলহাস মিয়া কিশোরীর দরজায় কড়া নাড়েন। তিনি জানান, তার স্ত্রী (কিশোরীর খালাতো বোন) ভীষণ অসুস্থ। এ কথা শুনে কিশোরী দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তার মুখ চেপে পাশের একটি বনে নিয়ে যান মুলহাস। সেখানে ধর্ষণের পর তাকে ফেলে পালিয়ে যান তিনি। পরে কিশোরীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সারা দিন অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন কিশোরীর ভাই। কিশোরীর মা বাবা মৃত্যুর পর প্রায় সময় কিশোরীর বাসায় আসা যাওয়া করতেন খালাতো বোনের জামাই মুলহাস মিয়া।
গত চার বছর আগে মা ও গত ছয় মাস আগে বাবার মৃত্যুর পর একমাত্র ভাইয়ের সাথেই উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় বাস করে আসছিলো ওই কিশোরী। ভাই পেশায় অটোরিকশা চালক। বোনকে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পড়ায়। কিন্তু অটো চালানোর জন্য বেশিরভাগ সময় বোন বাড়িতে একা থাকে। এদিকে প্রায়ই কিশোরীদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতো খালাতো বোনের জামাই মুলকাস।
স্থানীয়রা আরো জানান, বাবা-মা হারা এতিম দুই ভাইবোন অনেক কষ্ট করে কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছে। একমাত্র অটোচালক ভাইয়ের আয়েই চলে তাদের সংসার। এরপরেও স্থানীয় কিছু ব্যক্তির সব সময় কুনজর পরিবারটির দিকে।
ভুক্তভোগী কিশোরী জানান, রাতে কে যেন আমার দরজায় ডাকাডাকি করতেছিল, আমি ভাই আসছে ভেবে ঘুম ঘুম চোখে দরজা খুলছি। অন্ধকারের মধ্যে তেমন কিছু দেখতে পারিনি, তার আগেই একটা কাপড় দিয়ে আমার মুখ বেঁধে আমাকে জঙ্গলে নিয়ে গেছে।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহনুর এ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।