১১ সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতার ব্যাংক হিসাব তলব
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সম্পাদকসহ সাংবাদিকদের শীর্ষ চার সংগঠনের ১১ নেতার ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউ। রোববার বিকেলে বিএফআইইউ থেকে এ বিষয়ে একটি চিঠি সকল ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে ওই ১১জন সাংবাদিক নেতার নাম, সাংগঠনিক পদবী, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে ব্যাংক লেনদেনের যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই ১১ জনের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য (কেওয়াইসি ফরম, লেনদেন বিবরণী এবং হিসাবের হালনাগাদ স্থিতিসহ) ১৮ সেপ্টেম্বরে মধ্যে পাঠাতে হবে।
১১ জনের তালিকার শুরুতেই রয়েছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এবং সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান।ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি বিএনপি সমর্থিত অংশের সভাপতি আব্দুল কাদের গণি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সমর্থিত অংশের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপুর নাম রয়েছে তালিকায়।
হিসাব তলবের বিষয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, সরকারের যে কোনো সংস্থা, যে কারো ব্যাংক হিসাবের তলব করতে পারে। তবে শুধুমাত্র সাংবাদিক নেতাদের তথ্য তলব করায় জনমনে একটা ভুল বার্তা যায়।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের বিএনপি সমর্থিত অংশের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সমর্থিত অংশের সভাপতি মোল্লা জালাল ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আব্দুল মজিদের ব্যাংক হিসাবের তথ্যও চাওয়া হয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, আমি জানি না কেন ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। বলতে চাই- কার ব্যাংকে কী পাওয়া যাচ্ছে এটা জনসম্মুখ প্রকাশ করা হোক। এ উদ্যোগ প্রকৃত যারা টাকা পয়সা আছে তাদেরকে আড়াল করার চেষ্টা বলে মনে করি।ঢাকা ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি মোল্লা জালাল দাবি করেন, তার হিসাবে কোনো ধরনের গরমিল পাওয়ার ‘সুযোগ নেই’।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী বলেন, হিসাব তলব নিয়ে তিনি ‘নেতিবাচক’ কোনো চিন্তা করছেন না।ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান বলেন, আমার ব্যাংক হিসাব খুঁজে যা পাওয়া যাবে তাতে রাষ্ট্রের লজ্জা পেতে হবে।
ঢাকা ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ বলেন, হিসাব তলবের বিষয়টি ‘ভিন্নমত দমনের চেষ্টা’ হতে পারে।হিসাব তলবের খবরে বিস্ময় প্রকাশ করে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালীন নোমানী বলেন, এতে আমার নাম দেখে খুবই বিস্মিত হয়েছি। আমাকে যারা ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করেন না, তারাও আমার আর্থিক সততা নিয়ে প্রশ্ন করেন এটা আমি বিশ্বাস করিনা। তাছাড়া স্ত্রী অসুস্থসহ পারিবারিক কারণে ব্যাংকে আমি অনেক টাকা ঋণগ্রস্থ। যেসব নেতার ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর সেই তথ্য সংগ্রহ করার পর, তা যেন জনসম্মুখে (পাবলিকলি) অবশ্যই প্রকাশ করেন, সেই জোর দাবি জানাচ্ছি।