উল্টাপাল্টা ও বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা না বলতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার ঠাকুরগাঁওয়ে সাংগঠনিক সফরের সময় তার নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ অনুরোধ করেন তিনি।
গত ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী অনুসারী পরিষদ একটি সভার আয়োজন করে। সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমানকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপির গঠনতন্ত্র মেনে তারেক রহমানকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বয়স হয়ে গেছে উল্লেখ করে ফখরুল ইসলাম বলেন, জাফরুল্লাহ সাহেব অত্যন্ত সম্মানিত ও জ্ঞানী-গুনি লোক। আর বয়স হয়ে গেলে মানুষ কিছু উল্টোপাল্টা কথা বলতেই পারেন। সুতরাং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমানকে দায়িত্ব দেয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তার মন্তব্যটা যুক্তিসংগত না। তিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন ও কথা বলছেন। কিন্তু তিনি একবারও ভাবছেন না- এসব কথা বললে ফ্যাসিবাদী বিরোধী আন্দোলন কিছুটা ব্যাহত হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন,গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে আছেন। তারেক রহমান আগেও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। দলের মধ্য থেকেই তিনি ধারাবাহিকভাবে এই পদে এসেছেন। তিনি বিদেশে থেকেও সফলতার সঙ্গে জাতীয়তাবাদী দলকে সুসংগঠিত করছেন।
তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিটি নেতা-কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। এখানে নেতৃত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না। দল তাঁর (তারেক রহমান) হাতে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং তিনি অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে ,অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী যে , অচিরেই দল সুসংগঠিত হবে এবং একটা আন্দোলন সৃষ্টি করতে পারব। যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী-ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি তাঁকে(ডা.জাফরুল্লাহ) অনুরোধ জানাব, যে সমস্ত কথায় জনগণ বিভ্রান্ত হয় সেসব কথা যেন তিনি না বলেন। তারেক রহমানই হচ্ছে বিএনপির নেতা। তারেক রহমানই আমাদের সুসংগঠিত করছেন। পুরো দল তাঁর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন,বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন সময় চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গেছে। যখন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ হলো তখন অনেকেই বলেছেন বিএনপি ধ্বংস হয়ে গেছে।কিন্তু বিএনপি ধ্বংস হয়নি। বিএনপি আবার খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আবার জেগে উঠেছে। গত ১২ বছর ধরে শুধু বিএনপি নয়, গোটা দেশে একটা বড় রাজনৈতিক সংকট-অস্তিত্বের সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
এসময় জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।