রাস্তায় জ্বলছে আগুন। প্রকাশ্যে পিস্তল হাতে গুলি ছুড়ছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য মো. গিয়াস উদ্দিন ওরফে সুজন। পরে ভিডিওটি ভাইরাল হয়। ভিডিও ভাইরালের পর গা-ঢাকা দিলেও শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সুজনকে কোতোয়ালি থানার আরেকটি মামলায় চট্টগ্রামে আনা হয়েছে।
এদিকে গিয়াস উদ্দিনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শনিবার ভোরে চট্টগ্রামের খুলশী থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁর সহযোগী মাঈনউদ্দীনকে। তাঁর কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তুল, একটি রিভলবার এবং ১৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
গত ৩০ আগস্ট চট্টগ্রামের চন্দনাইশে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে প্রকাশ্যে গুলি ছোড়ার পর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর গিয়াস গা-ঢাকা দেন। তার ব্যবহৃত অস্ত্রটি অবৈধ বলে নিশ্চিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
র্যাব–৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক নূরুল আবছার জানান, চন্দনাইশের হাশিমপুরে আলোচনা সভায় গুলি বর্ষণ ও নাশকতার সৃষ্টির ঘটনায় চন্দনাইশ থানায় গত বৃহস্পিতবার একটি মামলা হয়। এ ঘটনার র্যাবের পক্ষ থেকে ছায়া তদন্তের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজন নাশকতা এবং গুলিবর্ষণের কথা তাঁরা স্বীকার করেছেন। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো অবৈধ বলেও তাঁরা স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
১ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা পাজামা ও কালো পাঞ্জাবি পরা এক যুবক প্রকাশ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করছেন। রাস্তার ওপর তখন আগুন জ্বলছে। তাতে কিছুক্ষণ পরপর কেরোসিন ঢেলে দিচ্ছেন কয়েকজন যুবক। এ সময় দলীয় স্লোগান দেওয়া হয়। এই ভিডিও দলের অনেক নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, গত ৩০ আগস্ট চন্দনাইশের হাশিমপুরে একটি কমিউনিটি সেন্টারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ব্যানারে শোক দিবসের আলোচনা সভা হয়। এ আয়োজনের দায়িত্ব ছিল গিয়াস উদ্দিনের ওপর।
হামলার ওই ঘটনা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার দুই পক্ষ থেকে চন্দনাইশ থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। এ মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে চন্দনাইশ পৌরসভা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহসভাপতি ও পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু তৈয়বকে।
অন্যদিকে আবু তৈয়বের পক্ষে করা মামলায় বাদী হন উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য মো. আবুল ফয়সাল। এতে ২১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে গিয়াস উদ্দিনকে।
এদিনের কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু আহমেদ প্রধান বক্তা ছিলেন। গিয়াস উদ্দিন মঞ্চে অতিথিদের পাশে ছিলেন। প্রধান অতিথি বের হয়ে যাওয়ার পর স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৈয়ব আলীর নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ তাদের।