হবিগঞ্জের লাখাইয়ে হাওরে স্বামীর সঙ্গে নৌ-ভ্রমণে যাওয়া এক নববধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও এর ভিডিও ধারণের ঘটনা ঘটেছে। এরপর টাকা দাবি করে না পাওয়ায় ওই ভিডিও এলাকার যুবকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার ছয়দিন পর বৃহস্পতিবার নববধূর স্বামী বাদী হয়ে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
আসামিরা হচ্ছেন মোড়াকড়ি গ্রামের মুছা মিয়া (২৬), মিঠু মিয়া (২১), হৃদয় মিয়া (২২), সুজাত মিয়া (২৩), জুয়েল মিয়া (২৫), মুড়াকড়ি ইউনিয়নের ছাত্রলীগনেতা সোলায়মান রনি (২২), মুছা মিয়া (২০) ও শুভ মিয়া (১৯)।বিচারক জিয়াউদ্দিন মাহমুদ মামলাটি আমলে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এফআইআর করতে লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামির নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানায়নি র্যাব। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাফিজুল ইসলাম। তিনি জানান, এক মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। গত ২৫ আগস্ট দুপুরে বাড়ির পাশের ওই হাওরে তারা নৌকাভ্রমণে যান। নৌকায় নবদম্পতি, তাদের এক বন্ধু ও মাঝি ছিলেন। সে সময় আরেকটি নৌকায় করে গ্রামের ৮ যুবক তাদের নৌকার গতিরোধ করেন। তাদের নৌকায় উঠে ওই যুবকরা তাকে ও তার বন্ধুকে মারধর করে আটকে রাখে। এরপর তার স্ত্রীকে পাশের নৌকায় তুলে নিয়ে দলবেধে ধর্ষণ করে। এ সময় মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখা হয়। ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে জানালে ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন যুবকরা। এ কারণে বিষয়টি এত দিন গোপন রেখেছিলেন তিনি।
তবে ঘটনার চার দিন পর ওই যুবকরা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আবারও নববধূর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হতে চান। এতে রাজি না হওয়ায় তারা এলাকার কয়েকজনের কাছে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেয়। এর মধ্যে নববধূর শারীরিক অবস্থাও খারাপ হতে থাকে। এরপর গতকাল বুধবার ওই নববধূকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম জানান, আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান চলছে। ইতোমধ্যে আসামি শুভকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।র্যাব জানায়, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার নাহিদ হাসান ও সিনিয়র এএসপি কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে র্যাব হবিগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরা আসামি সোলায়মান রনি ও মিঠু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে।