জাপান থেকে আসা দুই শিশু ও তাদের বাবা-মাকে ১৫ দিন একসঙ্গে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকবেন সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা। আর নিরাপত্তায় জন্য নিয়োজিত থাকবে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন আদালত।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে আজ শুনানি হয়। ওই শিশুদের মা জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকোর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির এ তথ্য জানিয়েছেন।
জাপান থেকে আসা দুই শিশুর মা এরিকো নাকানো ও বাবা ইমরান শরীফ দুজনেই তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে গিয়েছিলেন সকালে। এরপর শিশুসন্তানেরা সিআইডির তত্ত্বাবধানে, বাবা তাঁর নিজের গাড়িতে আর মা তাঁর মতো করে আদালতে পৌঁছান। দুই বোন হাত ধরে জড়সড় হয়ে ঢোকে এজলাসে।
কয়েক পর্বে দুই পক্ষের আইনজীবী, স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে কথা বলে বেলা ৩টার পর আদালত সিদ্ধান্ত দেন আগামী ১৫ দিন শিশুরা মা–বাবাকে নিয়ে গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে থাকবে। এই ফ্ল্যাটের খরচ বহন করবেন জাপানি নাগরিক এরিকো নাকানো ও তাঁর স্বামী বাংলাদেশি আমেরিকান ইমরান শরীফ। পারিবারিক সহিংসতার মতো কোনো ঘটনা যেন না ঘটে, সে জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক থাকবেন। নিরাপত্তা দেবে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ঠিক করা হয়েছে ১৬ সেপ্টেম্বর। তবে এর আগে কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আদালতকে জানাতে পারবে উভয় পক্ষই।
এর আগে দুই মেয়ে শিশুর জিম্মা চেয়ে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। হাইকোর্ট আজ দুই শিশুকে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে অনুসারে দুই শিশু আজ আদালতে আসে।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আজ দুই শিশুকে আদালতে হাজির করতে তাদের বাবা ও ফুফুকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর আগে ২২ আগস্ট দুই শিশুকে ইমরানের বারিধারার বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারপর থেকে তারা উইমেন সাপোর্ট সেন্টারে ছিল।
আদালতের এই আদেশের পর শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ, তাঁর আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও এরিকো নাকানোর আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আলাদা আলাদাভাবে প্রত্যেকের কাছেই জানতে চাওয়া হয়েছিল কে জিতলেন?ইমরানের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম বলেন, আজ জয় হয়েছে শিশুদের। তিনি সে কারণে খুশি। আদেশ এসেছে তাঁর দেওয়া প্রস্তাবমতো।