আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ২টা ৩৩ মিনিটে মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পাওয়ার বিষয়টি জানান পরীমনির আইনজীবী মজিবর রহমান। প্রথমে জামিন আবেদনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন তিনি।
সর্বশেষ গত ১৯ আগস্ট পরীমনির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তৃতীয় দফায় ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিএমএম আদালত। সিএমএম আদালতের জামিন নামঞ্জুরের ওই আদেশের বিরুদ্ধে গত ২২ আগস্ট মহানগর দায়রা জজ আদালতে পরীমনির পক্ষে জামিন আবেদন দাখিল করা হয়। বিচারক ১৩ সেপ্টেম্বর জামিন আবেদনের শুনানির দিন ঠিক করেন। জামিন শুনানির দিন আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর ২১ দিন বিলম্বে ধার্য্য হওয়ায় তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন পরীমনির আইনজীবী জেডআই খান পান্না ও মো. মজিবুর রহমান।
এর আগে গত রোববার মহানগর দায়রা জজ আদালত জামিন শুনানির এদিন ধার্য করেন। এর আগে হাইকোর্ট গত বৃহস্পতিবার মাদক মামলায় গ্রেপ্তার পরীমনির জামিন আবেদনের শুনানি দুইদিনের মধ্যে কেন হবে না এই মর্মে রুল জারি করেন। এরপর রোববার নিম্ন আদালত পরীমনির জামিন আবেদনের শুনানি ১৩ই সেপ্টেম্বর থেকে ৩১শে আগস্ট নির্ধারণ করেন।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি কেএম জাহিদ সারওয়ার কাজলের বেঞ্চ ওই আদেশ প্রদান করেন। গত রোববার হাইকোর্টের ওই আদেশ পাওয়ার পর বিচারক ইমরুল কায়েশ হাইকোর্টের রুলের জবাব দেয়ার আগেই ৩১ আগস্ট জামিন শুনানির তারিখ পুনঃনির্ধারণ করে এগিয়ে আসেন।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বিকেল ৪টার পর পরই বনানীর ১২ নম্ব রোডের পরীমনির বাসায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। এ সময় বাসা থেকে ১৮.৫ লিটার বিদেশি মদ, চার গ্রাম আইস, এক স্লট এলএসডি এবং একটি পাইপ জব্দ করা হয়। ওই ঘটনায় র্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. মজিবর রহমান মাদক আইনে একটি মামলা করেন।
ওই মামলায় গত ৫ আগস্ট পরীমনির চার দিনের ও গত ১০ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের রিমান্ড পাঠান আদালত। ওই রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে মামলায় তৃতীয়দফা রিমান্ড আবেদনে গত ১৯ আগস্ট পরীমনির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই রিমান্ড শেষে গত ২১ আগস্ট পরীমনিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য যে, গত জুনে রাজধানীর আশুলিয়ায় অবস্থিত বোট ক্লাবের ঘটনায় আলোচনায় আসেন নায়িকা পরীমনি। আশুলিয়ার এ ক্লাবে গভীর রাতে তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনেন ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে গত ১৪ জুন তিনি ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় নাসির ইউ মাহমুদ ও তার সহযোগী পরিমনির বন্ধু তুহিন সিদ্দিকী অমি গ্রেপ্তার হন এবং সম্প্রতি নাসির উদ্দিন আহমেদ জামিন পেয়েছেন।
পরীমনির মামলায় বলা হয়, পরীমনি এসব মাদকদ্রব্য কবির নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে সংগ্রহ করে বাসায় রাখতেন। মামলায় কবিরের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা উল্লেখ নেই। একই মামলায় আবার র্যাব দাবি করেছে, চিত্রনায়িকা পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তিনি প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের কাছ থেকে মাদক সংগ্রহ করতেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের যে ধারায় পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পারলে তাঁর সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড হতে পারে।