এক্সক্লুসিভবাংলাদেশরাজনীতি

বিদেশে যেতে হলে খালেদাকে জেলে গিয়ে আবেদন করতে হবে

দণ্ড স্থগিতের পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিদেশ যেতে চাইলে জেলে গিয়ে নতুন করে আবেদন করতে হবে বলে মন্তব্য করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।আজ শনিবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে এক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম ও এমআরডিআই যৌথভাবে আইন সাংবাদিকতা নিয়ে দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় আইনমন্ত্রী প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে আলোচনা করেন। ফৌজদারি কার্যবিধি নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ৪০১ ধারার বিষয়টি উঠে আসে।

তিনি বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে বা শর্ত সাপেক্ষে খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে আবারও তাকে জেলে যেতে হবে এবং নতুন করে আবেদন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এমন অবস্থায় তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী শর্তসাপেক্ষে তিনি বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে তাকে কারাগারে গিয়ে নতুন করে আবেদন করতে হবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা সরকারের ক্ষমতা। এ ৪০১-এর সংস্কারের ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ব্যবহার করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটা ব্যবহার করে। তাতে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী থেকে অনুমতি নিতে হয়। এটা প্রয়োগ করার আগেই রুল অব বিজনেস অনুযায়ী আইন মন্ত্রণালয় থেকে মতামত নিতে হয়। এমন একটা বিষয় নিয়ে আমার মতামত দিতে হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মামলার ক্ষেত্রেও মতামত দিতে হয়েছে। ওনার আত্মীয়-স্বজনের পক্ষ থেকে যখন আবেদন করা হলো, তখন তার সাজা স্থগিত করে ওনাকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিলাম। তার মানে তার পক্ষে যে আবেদনটা ছিল তা নিষ্পত্তি হলো। পরে ওনারা বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন। আমরা কিন্তু তার অনুমতি দেইনি। আমরা কিন্তু তাকে দু’টি শর্ত দিয়ে মুক্তি দিয়েছি। সেই শর্ত মেনেই তিনি মুক্তি পেয়েছেন। এখন পরের ধাপে তারা বিদেশ যেতে অনুমতি চায়। কিন্তু কথা যে আবেদনটি নিষ্পত্তি করা হলো সেটা পুনর্বিবেচনার ক্ষমতা আইনে আমাদের দেওয়া হয়নি। 

তাহলে ওনাদের কী করতে হবে। সেটা হলো তাদের আবার আবেদন করতে হবে। এখন আবার আবেদন করতে হলে আগের আবেদনটি বাতিল করে ওনাকে (খালেদা জিয়া) আবার জেলখানায় গিয়ে আবার আবেদন করতে হবে। এখন এটা তো অলরেডি একবার নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গতবছর ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। দণ্ডের কার্যকারিতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হলে তিনি কারামুক্ত হন। ওই মুক্তির মেয়াদ শেষে গতবছর সেপ্টেম্বরে আগের শর্তে তা আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়৷ একই শর্তে মোট তিন দফায় তিনি মিক্ত রয়েছেন। শর্ত অনুযায়ী, ৭৫ বছর বয়সি খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারবেন না, গুলশানে তার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ থেকে তাঁকে চিকিৎসা নিতে হবে৷

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজায় কারাজীবন শুরু করেন খালেদা জিয়া৷ পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় হয় এবং তার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে৷

Back to top button